Saturday, May 24, 2025
Latestদেশ

‘প্যান্ট খোলা হয়, পরিচয়পত্র দেখা হয়’, পহেলগাঁও কান্ডে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা প্রত্যক্ষদর্শীদের

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসীরা অমুসলিম পর্যটকদের চিহ্নিত করে তাদের হত্যা করে। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান সৈয়দ আসিম মুনির আহমেদ শাহের হিন্দুবিরোধী একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়ার কয়েকদিন পর এই ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পর্যটকরা মাঠে মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বলতে শোনা যাচ্ছে, হামলাটি ধর্মীয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। কারণ সন্ত্রাসীরা হিন্দু পর্যটকদের চিহ্নিত করার পর মাথায় গুলি করে। 

প্রত্যক্ষদর্শী জানান, পুরুষদের নির্দেশ দেওয়া হয় প্যান্ট খোলার, তারপর গুলি করা হয়েছে। আইডি কার্ডও দেখে ধর্মীয় পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। 

ভাইরাল ছবিতে দেখা যায়, শোকাহত মহিলা অসহায়ভাবে তার মৃত স্বামীর পাশে বসে আছেন। খবর অনুসারে, ওই দম্পতি সম্প্রতি বিয়ে করে ছিলেন। হানিমুনে কাশ্মীরে গিয়েছিলাম তারা। সন্ত্রাসীরা তার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করে।

ন্যাক্কারজনক এই হামলায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৬ জনের। এই সন্ত্রাসী হামলার খবর পেয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাথে কথা বলেন। শাহকে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেওয়ার এবং পরিস্থিতি সরজমিনে মূল্যায়ন করার নির্দেশ দেন।

এরপর শ্রীনগরে পৌঁছে যান অমিত শাহ এবং সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সাথে জরুরি নিরাপত্তা পর্যালোচনা বৈঠক করেন। শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সাথে একটি ভিডিও কনফারেন্স করেন তিনি।

এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অমিত শাহ বলেন, “দোষীদের কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে। হামলার সঙ্গে জড়িত কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না।” এই ঘটনার পর এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, হিন্দু পর্যটকদের উপর এই হামলার ঘটনাটি ঘটে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের একটি ভিডিও সামনে আসার কিছুদিন পরেই। যেখানে তিনি ধর্মান্ধ মন্তব্য করে পাকিস্তানিদের তাদের সন্তানদের ‘হিন্দু এবং মুসলিমদের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য’ সম্পর্কে বলার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

ইসলামাবাদে এক জাতীয় আলেম সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান বলেন, “শরিয়া আইন মেনে না চলা কাউকেই প্রকৃত পাকিস্তানি হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। পাকিস্তানের জাতীয় পরিচয় সরাসরি এবং একচেটিয়াভাবে ইসলামী নীতির সাথে সংযুক্ত। শরিয়া প্রত্যাখ্যান করলে আপনি পাকিস্তানকেও প্রত্যাখ্যান করবেন।”

পাক সেনাপ্রধানের এহেন মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তানের হিন্দু, খ্রিস্টান এবং শিখরা আতঙ্কে ভুগছেন। 

দ্বি-জাতি তত্ত্বের কথা উল্লেখ করে পাক সেনাপ্রধান দাবি করেন, “পাকিস্তান এবং ভারত ধর্ম, সংস্কৃতি এবং আদর্শের ক্ষেত্রে মৌলিকভাবে আলাদা।”

তথ্যসূত্র – OP India