আমেরিকার কাছ থেকে ১৩ কোটি ১০ লাখ ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম কিনছে ভারত
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের সুর ক্রমেই চড়ছে। জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। এমন টানটান উত্তেজনার মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অত্যাধুনিক সামরিক প্রযুক্তি কেনার চুক্তি অনুমোদন করল ভারত।
শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য ১৩ কোটি ১০ লাখ ডলারের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
চুক্তির কেন্দ্রে রয়েছে ‘সি-ভিশন’ নামক এক উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সফটওয়্যার, যা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মেরিটাইম ডোমেইন অ্যাওয়্যারনেস বা সমুদ্রসীমা পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ভারতের জন্য প্রস্তাবিত এই সফটওয়্যার প্যাকেজ তাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সমুদ্র সীমান্তে হুমকি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি কৌশলগত অবস্থান, বিশ্লেষণ ক্ষমতা এবং সামগ্রিক সামুদ্রিক সচেতনতা আরও শক্তিশালী করবে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সি-ভিশন সফটওয়্যার ভারতীয় নৌবাহিনীর অস্ত্রভাণ্ডারে যুক্ত হলেও দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক ভারসাম্যে তাৎপর্যপূর্ণ কোনও পরিবর্তন ঘটবে না। সফটওয়্যারটি ভারতে একীভূত করতে কোনো প্রযুক্তিগত সমস্যা হবে না বলেও জানানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত শুধু একটি অস্ত্র কেনার চুক্তি নয়, বরং বৃহত্তর কৌশলগত অংশীদারিত্বের অংশ। যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রতিরক্ষা সহযোগিতার প্রতিফলন এটি। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের প্রভাব প্রতিহত করার লক্ষ্যে দুই দেশই পারস্পরিক সমন্বয় জোরদার করছে।
এই চুক্তি এমন এক সময়ে স্বাক্ষরিত হল যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক চরম উত্তেজনার পর্যায়ে পৌঁছেছে। ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন প্রাণ হারান। ভারত দাবি করেছে, হামলাকারীদের মধ্যে পাকিস্তানি নাগরিকের উপস্থিতি এবং হাফিজ সইদের সংযোগ পাওয়া গিয়েছে। তার পর থেকেই নয়াদিল্লি ইসলামাবাদকে আন্তর্জাতিকভাবে কোণঠাসা করতে মরিয়া। এরই মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এই চুক্তি অনুমোদন পাকিস্তানের ওপর একপ্রকার কূটনৈতিক চাপ হিসেবেই দেখছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
সামরিক সহযোগিতা ও প্রযুক্তি বিনিময়ের এই সিদ্ধান্ত শুধু ভারতীয় নৌবাহিনীকে নয়, গোটা ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশলকেই আরও সুসংহত ও আধুনিক করে তুলবে বলেই মত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের।