নিজের দেশেই উদ্বাস্তু হিন্দুরা! মুর্শিদাবাদ কান্ডে ঘরছাড়াদের পাশে রামকৃষ্ণ মিশন
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ঘিরে মুর্শিদাবাদে শুরু হওয়া হিংসা এখনও পর্যন্ত প্রাণ কেড়েছে তিনজনের, যার মধ্যে একজন কিশোরও রয়েছে। ওই হিংসার জেরে এখনও ঘরছাড়া কয়েকশো মানুষ। মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান থেকে পালিয়ে পড়শি জেলা মালদার কালিয়াচকে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। পারলালপুর হাই স্কুল এখন কার্যত উদ্বাস্তু শিবিরে পরিণত হয়েছে।
এই শিবিরে ১৫ এপ্রিল রামকৃষ্ণ মিশনের তরফ থেকে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়। রামকৃষ্ণ মিশনের বিবৃতি অনুযায়ী, “মালদার কালিয়াচকের পারলালপুর হাই স্কুলে আশ্রয় নেওয়া ৩৫৫ জন ব্যক্তি এবং ৫২ জন শিশুকে সাময়িক ত্রাণ প্রদান করেছে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম। প্রত্যেককে সাবান, টুথপেস্ট, টুথব্রাশ, ডিটারজেন্ট পাউডার, গামছা, চুলের তেল, বিস্কুট এবং কেক সরবরাহ করা হয়েছে। শিশুদের জন্য সরবরাহ করা হয়েছে হরলিক্স/বেবি ফুড।”
রামকৃষ্ণ মিশনের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, “স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শকে সমুন্নত রাখার জন্য রামকৃষ্ণ মঠ এবং রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা; মানবসেবা ঈশ্বরের উপাসনার সমতুল্য। এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে আপনার সময়োপযোগী সহায়তা অভাবীদের জন্য সান্ত্বনা এবং আশা এনেছে।”
উল্লেখ্য, ১১ এপ্রিল থেকে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে হিংসা। গুলিবিদ্ধ হয়ে এক কিশোরের মৃত্যু হয়। ১২ এপ্রিল সামশেরগঞ্জের রানিপুরের জাফরাবাদে বাবা-ছেলেকে পিটিয়ে, কুপিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। এরপর তাঁদের বাড়ি ও টোটোতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশকে ফোন করেও কোনও সাড়া মেলেনি।
সেদিনই ধুলিয়ান পুরসভা চত্বরে ব্যাপক ভাঙচুর হয়। ভাঙচুর চালানো হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে, পরে তাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ধুলিয়ানের একটি শপিংমলেও লুটপাট চালানো হয়।
বর্তমানে এলাকায় টহল দিচ্ছে বিএসএফ। এখনও পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।