‘টাকা দিয়ে কী হবে?, ক্ষতিপূরণ নেব না’, জানালেন ওয়াকফ হিংসায় খুন হরগোবিন্দ-চন্দনের পরিবার
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: মুর্শিদাবাদের ওয়াকফ হিংসায় নিহত হরগোবিন্দ দাস ও তাঁর ছেলে চন্দন দাসের পরিবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলেও, সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেন নিহতদের পরিবার। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, টাকা নয়, তাঁরা দোষীদের কঠিনতম শাস্তি চান।
১৬ এপ্রিল হরগোবিন্দ এবং চন্দনের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে চরম অবমাননার ছবি ধরা পড়ে। অভিযোগ, আতঙ্কে কেউ পাশে দাঁড়াননি। পুরোহিত, ক্ষৌরকার— কেউই আসেননি শ্রাদ্ধে। বাধ্য হয়ে কোনও আচার-অনুষ্ঠান ছাড়াই, নিজের মতো করে শেষ শ্রদ্ধা জানান দাস পরিবারের সদস্যরা।
হরগোবিন্দের স্ত্রী পারুল দাস জানিয়েছেন, ‘‘টাকা দিয়ে কী হবে? আমরা ন্যায় চাই। যারা আমার স্বামী আর ছেলেকে মেরে ফেলল, তারা যেন কোনওভাবেই ছাড়া না পায়।’’ একই সুরে চন্দনের স্ত্রী পিঙ্কি দাস বলেন, ‘‘আমরা ক্ষতিপূরণ চাই না। চাই স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প, যাতে এইভাবে আর কারও প্রাণ না যায়।’’
পিঙ্কির অভিযোগ, ‘‘পুলিশ যদি সময়মতো আসত, তাহলে হয়তো আমার স্বামী বেঁচে থাকত। আমরা বারবার ফোন করেও পুলিশ আসেনি।’’ হরগোবিন্দের মেয়ে বলেন, ‘‘আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোন করেছি, কেউ আসেনি। পরে পুলিশ এলো, তাও বিএসএফকে নিয়ে, যখন সব শেষ। এখন মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ক্ষতিপূরণ দেবেন!’’
ঘটনার জেরে দুই অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ— একজনকে মুর্শিদাবাদের সুতি, অন্যজনকে বীরভূমের মুরারই থেকে। জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে।
এদিকে ওইদিনের হিংসার প্রতিবাদে ১৬ এপ্রিল ‘হিন্দু শহিদ দিবস’ পালন করে বিজেপি। পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ইজাজ আহমেদ নামে এক মুসলিম ব্যক্তি ওই দিন বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত হয়েছেন। তাঁর পরিবারের জন্যও ঘোষণা করা হয়েছে ১০ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ।