Wednesday, November 19, 2025
Latestরাজ্য​

‘কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞপ্তি জারি করা সত্ত্বেও উদ্বাস্তু হিন্দুদের পুলিশি হেনস্থা করা হচ্ছে কেন?’, প্রশ্ন CAA আন্দোলনকারীর

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদ্বাস্তু হিন্দুদের পুলিশি হেনস্থার অভিযোগ। যারা বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের কারণে ভারতে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে CAA আন্দোলনকারী গোপাল গয়ালি বলেন, ‘আমি নিজেও একজন উদ্বাস্তু হিন্দু। আমার পূর্বপুরুষ গোপালগঞ্জের। সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে উদ্বাস্তু হেনস্থার ঘটনা আমরা অতীতেও দেখেছি বর্তমানেও দেখছি।’

গোপাল গয়ালি বলেন, ‘আমার বাড়ির আশপাশে বহু উদ্বাস্তু মানুষের বসবাস। আমাদের কাছে প্রচুর মানুষ আসে। তাদের অভিযোগ, তাদেরকে পুলিশ হয়রানি বা গ্রেফতার করছে ফরেনার্স এবং পাসপোর্ট আইনে। আগে ফরেনার্স এবং পাসপোর্ট আইনে পুলিশ গ্রেফতার করতো। তবে সিএএ লাগু হয়ে যাওয়ার পর যারা ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত যারা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের ছাড় দেওয়া হয়! কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে যেসমস্ত উদ্বাস্তু অমুসলিমরা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তাদেরকে হেনস্থা করা যাবে না। তাদের ক্ষেত্রে ফরেনার্স এবং পাসপোর্ট আইন লাগু হবে না। বিশেষ ছাড় দেওয়া হবে তাদের। শরণার্থীদের বিরুদ্ধে ফরেনার্স এবং পাসপোর্ট আইনে কোনো মামলা করা যাবে না।’

গোপাল গয়ালির অভিযোগ, ‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সাফ জানানো সত্ত্বেও দুর্ভাগ্যবশত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পুলিশ ফরেনার্স এবং পাসপোর্ট আইনে উদ্বাস্তু হিন্দুদের গ্রেফতার করেছে। রাজ্যের বিভিন্ন থানাতে শরণার্থী হিন্দুদের আটকে রাখা হয়েছে। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি দমদম সেন্ট্রাল জেলে এরকম অন্তত ১ হাজার উদ্বাস্তুকে আটকে রাখা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে ফরেনার্স ও পাসপোর্ট আইনে মামলা করা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে পিটিশন ফাইল করবো। মমতার প্রশাসন উদ্বাস্তু হিন্দুদের কেন আটক করছে? রাজারহাট নিউটাউনে এক উদ্বাস্তু হিন্দুর নাম ২০০২ ভোটার লিস্টে নেই, তাকে নোটিশ পাঠিয়েছে BDO থেকে। যে আপনি ভারতীয় নাগরিক নন। আপনি আপনার ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ দিন।’

উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের যেসমস্ত অমুসলিমরা ভারতে এসেছেন তারা পাসপোর্ট বা ভ্রমণের ডকুমেন্ট ছাড়াই ভারতে থাকতে পারবেন। সংসদে পাশ হওয়া ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ফরেনার্স অ্যাক্ট, ২০২৫ অনুযায়ী এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রের এই নির্দেশে পার্শ্ববর্তী তিন মুসলিম প্রধান দেশ থেকে আসা অমুসলিমরা অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছেন। তাহলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ তাঁদেরকে কেন হেনস্থা করছে? উঠছে প্রশ্ন। বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই উদ্বাস্তু হিন্দুদের পুলিশি হেনস্থার ঘটনা ঘটছে।