Tuesday, May 13, 2025
Latestদেশ

৬৩ হাজার কোটি দিয়ে আরও ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: পহেলগাঁও হামলার প্রেক্ষাপটে যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চরমে, ঠিক সেই সময়ে ভারত বড়সড় প্রতিরক্ষা পদক্ষেপ নিল। সোমবার, ফ্রান্সের সঙ্গে পাকাপাকি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে ভারত ২৬টি নতুন রাফালে ‘এম’ যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সদর দপ্তর দিল্লির সাউথ ব্লকে অনুষ্ঠিত এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ভারতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং এবং ফ্রান্সের পক্ষে ছিলেন ভারতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত। দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরাও ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

এই ২৬টি যুদ্ধবিমান ভারতীয় নৌসেনার জন্য বিশেষভাবে তৈরি মেরিন সংস্করণ। এক আসনের ২২টি ও দুই আসনের ৪টি রাফালে বিমান কেনা হচ্ছে, যার মোট খরচ প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকা। ফ্রান্সের প্রখ্যাত প্রতিরক্ষা সংস্থা দাসো এভিয়েশন থেকেই এই যুদ্ধবিমানগুলি কেনা হচ্ছে। বর্তমানে আইএনএস বিক্রান্ত এবং আইএনএস বিক্রমাদিত্য—এই দুই এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার থেকেই উড়বে রাফালে এম।

বর্তমানে ভারতীয় নৌসেনার কাছে থাকা মিগ-২৯কে যুদ্ধবিমানগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ও কার্যক্ষমতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছিল। সেই সমস্যা মেটাতেই এই রাফালে কেনা, যা ভারতের নৌসেনাকে আগামী দশকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই যুদ্ধবিমানগুলি শুধু আকাশে নয়, সমুদ্রেও ভারতের প্রতিরক্ষা বলয়কে আরও অটুট করে তুলবে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন চুক্তির মধ্যে শুধু যুদ্ধবিমান কেনাই নয়, রয়েছে রক্ষণাবেক্ষণ, প্রযুক্তিগত সহায়তা, লজিস্টিক সাপোর্ট এবং ভারতীয় নৌসেনার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও।

এই চুক্তি স্বাক্ষরের পাঁচ বছরের মধ্যেই যুদ্ধবিমানগুলি সরবরাহ করবে দাসো এভিয়েশন। ২০২৩ সালের জুলাই মাসেই রাফালে এম-এর নির্ণায়ক পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় এই চুক্তির পথে এগোয় ভারত। ঠিক হয়েছে, ২০৩১ সালের মধ্যে সমস্ত রাফালে ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে চলে আসবে। এর ফলে ভারতের হাতে থাকা রাফালে যুদ্ধবিমানের সংখ্যা দাঁড়াবে ৬২।

এদিকে, প্রতিরক্ষা মহলের মতে, রাফালে এম বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম উন্নত মেরিন যুদ্ধবিমান। সূত্রের দাবি, এই নতুন রাফালে বিমানগুলোতে থাকবে ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা যুদ্ধের ময়দানে ভারতের আগ্রাসী কৌশলকে আরও মজবুত করবে।

এই চুক্তি কেবল ফ্রান্সের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দৃঢ়তা নয়, পাশাপাশি ভারতের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির দিকেও একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।