‘হোলি বছরে একবার আসে, জুম্মার নামাজ বছরে ৫২ বার হয়, রঙে আপত্তি থাকলে বাড়িতে থাকুন’, মন্তব্য যোগীর পুলিশের
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: হোলি বছরে একবার আসে, যেখানে প্রতি শুক্রবার জুম্মার নামাজ হয়। অর্থাৎ বছরে ৫২ বার জুম্মার নামাজ হয়। তাই রঙে আপত্তি থাকলে বাড়িতে থাকুন। উত্তরপ্রদেশের এক পুলিশ আধিকারিক এমনটাই মন্তব্য করেছেন। বিজেপি বিরোধীরা পুলিশ আধিকারিকের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন।
কি বলেছিলেন ওই পুলিশ আধিকারিক?
আগামী ১৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে হোলি উৎসব। একই দিনে পালিত হবে রমজান মাসের নামাজও। এই প্রেক্ষাপটে উত্তরপ্রদেশের সম্ভল জেলার কতোয়ালি থানায় হোলি ও রমজান উপলক্ষে শান্তি কমিটির বৈঠক আয়োজন করা হয়। সেখানে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পুলিশ আধিকারিক অনুজ চৌধুরী বলেন, “হোলি বছরে একবার আসে, যেখানে প্রতি শুক্রবার জুম্মার নামাজ হয়। অর্থাৎ বছরে ৫২ বার জুম্মার নামাজ হয়। ফলে যদি কারও রঙে আপত্তি থাকে, তাহলে তাঁর উচিত বাড়িতে থাকা। আর যদি কেউ বাইরে আসেন, তবে উৎসবে সামিল হওয়া উচিত। উৎসব মিলেমিশে পালন করাই রেওয়াজ। যদি মুসলিমরা ইদের জন্য অপেক্ষা করেন, তবে হিন্দুরাও হোলির জন্য প্রতীক্ষা করেন। তাই দুই সম্প্রদায়েরই উচিত একে অপরের উৎসবকে সম্মান করা।”
বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া
এই মন্তব্য ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। সমাজবাদী পার্টির নেতা শরবেদ্র বিক্রম সিং বলেন, “সরকারি আধিকারিকদের বিজেপির এজেন্ডার শিকার হওয়া উচিত নয়। তিনি শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রীকে খুশি করতেই এই মন্তব্য করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।”
কংগ্রেসও এই মন্তব্যের নিন্দা করে বলেছে,“একজন সরকারি আধিকারিকের প্রধান কর্তব্য হলো ধর্মনিরপেক্ষ মনোভাব বজায় রাখা। প্রশাসনের উচিত, যারা হোলির রঙে স্বস্তি বোধ করেন না, তাঁদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা। দুই সম্প্রদায়ের উৎসবই শান্তিপূর্ণভাবে হওয়া উচিত।”
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
এই বিতর্ক নতুন নয়। বিগত কয়েক বছরে ধর্মীয় উৎসব ও প্রশাসনিক ভূমিকা নিয়ে বহুবার বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধীরা দাবি করছে, যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার প্রশাসনকে সাম্প্রদায়িক পথে পরিচালিত করছে, যা উত্তরপ্রদেশের সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট করছে।
পুলিশ প্রশাসন যদিও নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেছে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখাই তাঁদের মূল লক্ষ্য। তবে বিরোধীদের মতে, সরকারি আধিকারিকের এমন বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এই বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের তরফে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।