কড়া অ্যাকশনে মুডে ভারতীয় সেনা, উড়িয়ে দেওয়া হলো ৫ লস্কর জঙ্গির বাড়ি
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাস দমনে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনীর মূল লক্ষ্য লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) সংগঠনের সক্রিয় সদস্যরা এবং তাদের বাড়ি।
পুলওয়ামা, শোপিয়ান, কুলগামসহ একাধিক জেলায় সন্ত্রাসবাদীদের ঘরবাড়ি চিহ্নিত করে তা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে সক্রিয় লস্কর ক্যাডার এহসান আহমেদ শেখের পুলওয়ামার মুরান এলাকায় অবস্থিত দোতলা বাড়ি আইইডি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
এর পাশাপাশি, শোপিয়ানের ছোটিপোরা এলাকায় লস্কর সদস্য শাহিদ আহমেদের বাড়ি এবং কুলগামের কুইমোহ এলাকায় জাকির গনির বাড়িও ধ্বংস করা হয়। কুলগামে অভিযানের সময় বিজবেহারার আদিল থোকার ও ত্রালের আসিফ শেখের বাড়িও ভেঙে ফেলা হয়। এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচজন সক্রিয় লস্কর সন্ত্রাসবাদীর বাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে:
আদিল গোজরি (বিজবেহারা)
আসিফ শেখ (ত্রাল)
আহসান শেখ (পুলওয়ামা)
শহীদ কুট্টে (শোপিয়ান)
জাকির গনি (কুলগাম)
পাহেলগাঁও হামলার বিস্তারিত
২২শে এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও এলাকার বৈসরন উপত্যকায় লস্কর-ই-তৈয়বার চার সদস্যের একটি সশস্ত্র দল হিন্দু পর্যটকদের উপর হামলা চালায়। একে-৪৭ রাইফেল এবং বডি ক্যামেরা পরে অভিযানে অংশ নেয় সন্ত্রাসবাদীরা। এই নির্মম হামলায় ২৬ জন প্রাণ হারান। সামরিক সূত্রের দাবি, হামলাকারীদের মধ্যে দুইজন ছিল স্থানীয়, বাকিরা পাকিস্তান থেকে আগত।
স্থানীয় দুই সন্ত্রাসবাদীর পরিচয়:
আদিল হুসেন থোকার: বিজবেহারার বাসিন্দা, ২০১৮ সালে বৈধ পথে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে গিয়ে সন্ত্রাসবাদী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এবং পরে জম্মু ও কাশ্মীরে ফিরে আসে।
আসিফ শেখ: ত্রালের বাসিন্দা, স্থানীয়ভাবে লস্করের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীদের মধ্যে কয়েকজন পশতুন ভাষায় কথাবার্তা বলছিল। সূত্রের খবর, এই হামলার জন্য দায়ী সন্ত্রাসবাদীরা মূলত পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বা সদস্য। যদিও দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামক ছায়া সংগঠনও এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, টিআরএফ মূলত লস্করেরই একটি ছদ্মবেশী গোষ্ঠী।
অভিযান অব্যাহত
নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পহেলগাঁও হামলার প্রতিক্রিয়ায় সন্ত্রাসবাদীদের প্রতি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কাজ করছে প্রশাসন। সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং যারা সরাসরি হামলার সাথে যুক্ত, তাদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
কাশ্মীর উপত্যকায় শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।