Saturday, May 17, 2025
Latestদেশ

‘পহেলগাঁও হামলায় জড়িতদের কেউ রেহাই পাবে না, খুঁজে খুঁজে বের করে খতম করা হবে’, হুঙ্কার অমিত শাহের

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ২২ এপ্রিল পেহেলগাঁও-এর বৈসারণে ঘটে যাওয়া নৃশংস জঙ্গি হামলার পর থেকেই উত্তপ্ত দেশ। ছক কষে চালানো সেই হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে খুন করে জঙ্গিরা। হামলার পিছনে ছিল সুপরিকল্পিত রেইকি, এবং এমন একটি স্থান বেছে নেওয়া হয়েছিল যেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষে তৎক্ষণাৎ পৌঁছানো সম্ভব নয়। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে চলে গুলি, এরপর এলাকা ছেড়ে পালায় হামলাকারীরা।

এই হামলার পরপরই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাশ্মীরে পৌঁছে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা আধিকারিকদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন। পরিস্থিতির সরেজমিন পর্যালোচনার পর বৃহস্পতিবার অসমে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি সরাসরি পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দেন এবং দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেন, “কাউকে ছাড়া হবে না। যেখানেই থাকুক, খুঁজে বের করে খতম করা হবে।”

সন্ত্রাসবাদ দমন প্রসঙ্গে অমিত শাহ সাফ জানিয়ে দেন, মোদী সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে অটল। তাঁর ভাষায়, “দেশে বা দেশের বাইরে থেকে কেউ সন্ত্রাস ছড়ালে তার কঠিন পরিণতি হবে। পেহেলগাঁও হামলার দায়ীরা কেউ রেহাই পাবে না। বদলা নেওয়া হবেই।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে পাকিস্তানকেই মূল বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের। দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাস ছড়ানোর চক্রান্তে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ মদত দীর্ঘদিনের অভিযোগ। সেই প্রেক্ষিতেই শাহের এই বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।

এদিকে, হামলার তদন্তে নেমেছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA)। বৃহস্পতিবার সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল পেহেলগাঁও পৌঁছে গোটা পরিস্থিতির মূল্যায়ন করেন। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গেও হয়েছে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। গোটা ঘটনার নেপথ্যে কারা, কোথা থেকে অস্ত্র এল, এবং কোন রুটে জঙ্গিরা ঢুকেছিল—সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দেশজুড়ে এই হামলার নৃশংসতায় শোকাহত সাধারণ মানুষ। বহু পরিবার এখনও বিশ্বাসই করতে পারছে না, এমন কিছু ঘটতে পারে। প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কণ্ঠে একই সুর—সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এই লড়াই চলবে, এবং দেশকে সুরক্ষিত রাখতে সরকার কোনো রকম আপস করবে না।

পহেলগাঁও হামলা গোটা জাতিকে নাড়িয়ে দিয়েছে। একদিকে দেশের মাটিতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা, অন্যদিকে পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি—সব মিলিয়ে স্পষ্ট, মোদী সরকার এই হামলার যোগ্য জবাব দেওয়ার পথে অগ্রসর হয়েছে। এখন নজর এনআইএ-র তদন্ত ও তার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।