Saturday, July 27, 2024
সম্পাদকীয়

কারণিক থেকে মুখ্যমন্ত্রী, জেনে নিন ইয়েদুরাপ্পার সংক্ষিপ্ত জীবনী

বেঙ্গালুরু: তৃতীয়বারের জন্য কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন ৭৫ বছর বয়সী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় কর্ণাটকের ২৩তম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেঙ্গালুরুর রাজভবনে তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান কর্ণাটকের রাজ্যপাল বজুভাই বালা।

১৯৪৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মান্ডিয়া জেলার কেআর পেট তালুকে জন্ম বুকানাকেরে সিদ্দালিঙ্গাপ্পা ইয়েদুরাপ্পার। তাঁর পিতার নাম সিদ্দালিঙ্গাপ্পা ও মা পুট্টাতায়াম্মা। ইয়েদুরাপ্পার বয়স যখন ৪ বছর তখন তাঁর মা মারা যান। ১৯৬৫ সালে মান্ডিয়ার পিইএস কলেজ থেকে ইয়েদুরাপ্পা পাশ করেন। শুরু করেন কারণিকের চাকরি দিয়ে। স্যোশাল ওয়েলফেয়ার দফতরে প্রথম শ্রেণির কারণিক থাকলেও ইয়েদুরাপ্পা চাকরি ছেড়ে শিকারিপুরায় চলে যান।

১৯৬৭ সালে মৈত্রা দেবীকে বিয়ে করেন ইয়েদুরাপ্পা। মৈত্রা দেবী চাল কলের মালিকের মেয়ে ছিলেন। ইয়েদুরাপ্পার দুই ছেলে এবং তিন মেয়ে। ছেলেদের নাম হলো রাঘবেন্দ্র ও বিজয়েন্দ্র। মেয়েদের নাম হলো অরুণাদেবী, পদ্মাবতী ও উমাদেবী। ২০০৪ সালে ইয়েদুরাপ্পার স্ত্রী মৈত্রা দেবী মারা যান।

কলেজ জীবন থেকেই ইয়েদুরাপ্পা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৭০ সালে ইয়েদুরাপ্পা আরএসএসের শিকারিপুরার সেক্রেটারি নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালে শিকারিপুরা টাউন পুরসভা ও জনসংঘের তালুক ইউনিটের সভাপতি নির্বাচিত হন।

১৯৭৫ সালে ইয়েদুরাপ্পা শিকারিপুরার টাউন পুরসভার সভাপতি নির্বাচিত হন। জরুরি অবস্থার সময় তিনি বেলারি ও শিমোগার জেলে বন্দি ছিলেন। ১৯৮৫ সালে জেল থেকে বেরিয়ে তিনি বিজেপির শিমোগা জেলার সভাপতি হন। এরপর ১৯৮৮ সালে তিনি বিজেপির কর্ণাটক রাজ্য সভাপতি হন।

১৯৮৩ সালে কর্ণাটক বিধানসভায় শিকারিপুরা থেকে জিতে যোগ দেন ইয়েদুরাপ্পা। তারপর শিকারিপুরা থেকে ৬ বার জিতেছেন ইয়েদুরাপ্পা। ১৯৯৯ সালে নির্বাচনে হারলেও উচ্চ কক্ষে বিজেপির প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। ২০০৪ সালে কর্ণাটক বিধানসভায় বিরোধী নেতা হন তিনি।

২০০৭ সালে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন ইয়েদুরাপ্পা। তবে তিনি মাত্র ৭দিন ক্ষমতায় ছিলেন। তার আগে জেডিএস-বিজেপির জোট হয়। ঠিক হয় ২০ মাস জেডিএস ও ২০ মাস বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকবেন। জেডিএসের কুমারস্বামী ২০ মাস সরকারে থাকার পরে দায়িত্ব ছাড়তে অস্বীকার করেন ইয়েদুরাপ্পা শপথগ্রহণ করলেও সাতদিনের বেশি সরকার স্থায়ী হয়নি।

২০০৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনে শিকারিপুরা থেকে ভোটে দাঁড়ান ইয়েদুরাপ্পা। তাঁর বিপক্ষে ছিলেন সমাজবাদী পার্টির নেতা এস বাঙ্গারাপ্পা দাঁড়া। তাঁকে সমর্থন দেন কংগ্রেস ও জেডিএস নেতারা। তা সত্ত্বেও ইয়েদুরাপ্পা ৪৫ হাজারের বেশি ভোটে জয়লাভ করে সরকার গড়েন।

২০০৮ সালের ৩০ মে ইয়েদুরাপ্পা ফের মুখ্যমন্ত্রী হন ও ৩ বছর ৬২ দিন সরকার চালান। তবে তাঁর বিরুদ্ধে খনি দুর্নীতির অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীর পদও ছাড়তে হয়েছে তাঁকে। বিজেপি ছেড়ে একসময় নতুন দলও(‌কেজেপি)‌ গড়েন তিনি। তবে সেক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধে না করতে পেরে ২০১৪ সালে শেষ পর্যন্ত ফেরেন সেই বিজেপিতেই।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ইয়েদুরাপ্পার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ছিল অনাড়ম্বর। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বিজেপির কোনও বড় নেতা উপস্থিত ছিলেন না। অমিত শাহ বা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসেননি। ইয়েদুরাপ্পাই মধ্যমণি ছিলেন। তবে ইয়েদুরাপ্পার সমর্থকদের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো।