‘১৪ আগস্ট রাতে জলকামান গুলো কোথায় ছিল? যখন প্রমাণ লোপাট করা হচ্ছিল তখন টিয়ার গ্যাস কোন আলমারিতে রাখা ছিল?’, নবান্ন অভিযানের ভূয়সী প্রশংসা করলেন অরিত্র দত্ত বণিক
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: নবান্ন অভিযানকে প্রশংসায় ভাসালেন অরিত্র দত্ত আরজি কর কান্ডের প্রতিবাদে ২৭ আগস্ট নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল ছাত্ররা। তাদের তরফে দাবি করা হয়েছিল, এই আন্দোলন পুরোপুরি অরাজনৈতিক। যদিও তৃণমূল-বামেদের তরফে অভিযোগ ওঠে এই আন্দোলনের পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে। এবার নবান্ন অভিযানকে লেটার মার্ক দিলেন অভিনেতা অরিত্র দত্ত বণিক।
অরিত্র বলেন, “কোটি কোটি মানুষ আমাকে দেখছেন, প্রথমেই মার্জনা চেয়ে নিচ্ছি। প্রথমে আমিও নবান্ন অভিযানের পিছনে রাজনৈতিক দলের হাত, এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনামূলক লেখা লিখেছি। আমি লিখেছি ছাত্রদের নাম করে কিছু সাদা চুল দাঁড়িওয়ালা লোকজনকে দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু সত্যিই আজকে এইখানে দাঁড়িয়ে এই ছবিগুলো দেখে তারা বিজেপি নাকি সিপিএমের সমর্থক নাকি তৃণমূলের সমর্থক সেটা আমাদের কাছে অপ্রয়োজনীয়। আজকে আমি পরাজিত হয়েছি, আপনারা জিতেছেন। সেইসমস্ত মানুষ জিতেছে, আপনারা গণতান্ত্রিকভাবে আমাকে রিপোর্ট কার্ডটা দিয়েছেন যে, কোনো রকম রাজনৈতিক মুখ ছাড়া, নেতা ছাড়া, দলীয় পতাকা ছাড়া, শুধুমাত্র দেশের পতাকা ছাড়া মানুষ যেভাবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমেছে ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড করতে হয়েছে।”
অরিত্র আরও বলেন, “সকাল থেকে জলকামান ব্যবহার করতে হয়েছে, টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করতে হয়েছে। সেখানে আমরা যারা ঠান্ডা ঘরে বসে ফেসবুক-টুইটারে লিখে প্রতিবাদ জানাই আমরা পরাজিত হয়েছি। আপনারা জিতেছেন, আপনারাই দেশের নায়ক। আজকে ওইখানে জলকামানের সামনে দাঁড়িয়ে যারা জাতীয় পতাকাটা ওড়াচ্ছেন তারা প্রমাণ করে দিয়েছেন, আমরা বিগ জিরো, আমরা হেরে গেছি। আমি জানতে চাই, ১৪ আগস্ট রাতে জলকামান গুলো কোথায় ছিল? প্রমাণ যখন লোপাট করা হচ্ছিল তখন টিয়ার গ্যাস গুলো কোন আলমারিতে রাখা ছিল? তখন আপনাদের কাছে নোটিশ আসে না? তখন আপনারা বোঝেন না কোনটি গুরুত্বপূর্ণ? কোনটা রাজনৈতিক আর কোনটা অরাজনৈতিক।”
অরিত্র বলেন, “কোন আন্দোলন অরাজনৈতিক হয়ে গেলে সেখানে সেখানে সকলেই অংশগ্রহণ করে। আপনি বলে দিতে পারেন এই ৭০ হাজার লোক সকলেই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত? এর মধ্যে বিজেপির লোক যেমন আছে, ছাত্র আছে, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, জাতি-ধর্ম-বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলেই রয়েছেন। এই চিত্র বাংলার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে যে, ঠান্ডা ঘরে বসে ব্লু প্রিন্ট করে কিছু হয় না। রাজনীতি যদি কেউ করে তাহলে এই অরাজনৈতিকের মোড়কে থাকা সাধারণ মানুষই করতে পারে। দেশের জাতীয় পতাকাটা নিয়ে যারা জল কামানের সামনে লড়ছিলেন তাঁরাই আজকে জিতেছেন, আমরা আজকে হেরেছি। আমি জানিনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজকে কোন বিবৃতি দিয়েছেন কিনা? তার বিবৃতি দেওয়ার সাহস হবে না। তিনি পুলিশদের এগিয়ে দিয়েছেন। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনাস্থল থেকে প্রমাণ লোপাট করেছেন, এটা নিয়ে সিবিআই বারবার সুপ্রিম কোর্টের সওয়াল করছে, সেটা নিয়ে কারও মাথা ব্যথা নেই। যত দোষ দেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষদের, তারা নাকি জঙ্গি, তারা নাকি রাষ্ট্রদ্রোহী। আর যারা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের, ১৪ আগস্ট রাতে আরজি কর হাসপাতালে প্রমাণ লোপাট করলেন, তারা কেউ রাজনীতি করছেন ন, সমস্ত রাজনীতি করছেন সাধারণ মানুষ। এই প্রশাসন ভয় পেয়েছে। আমি আমার দেশের নাগরিকদের নিয়ে গর্বিত। আপনি বিজেপি করুন, তৃণমূল করুন কিংবা সিপিএম করুন আমি গর্বিত আপনারা পুলিশকে ভয় পাইয়েছেন, পুলিশকে সারাদিন ছুটিয়েছেন।”