‘বন্ধু’ দেশ ভারত-ইসরায়েলের সঙ্গে শুল্ক মুক্ত বাণিজ্য! আলোচনা করছেন ট্রাম্প
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: শুল্ক আরোপের নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক বিশেষ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভারত, ইসরায়েল এবং ভিয়েতনামের সঙ্গে শুল্ক বিষয়ক সমঝোতার জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। আগামী ৯ এপ্রিল থেকে আমদানি পণ্যের উপর নতুন হারে শুল্ক আরোপ করতে চলেছে আমেরিকা, আর তার আগেই তিন দেশের সঙ্গে সমঝোতার জন্য শেষ মুহূর্তের তৎপরতা শুরু হয়েছে।
সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিয়েতনামের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি নিজেই প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। তাঁর দাবি, ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি তো ল্যামের সঙ্গে তাঁর ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে এবং ভিয়েতনাম আমেরিকার পণ্যে শুল্ক সম্পূর্ণভাবে তুলে নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া বার্তায় ট্রাম্প বলেন, ‘‘সমঝোতা হলে ওঁরা মার্কিন পণ্যে শুল্ক শূন্য করতে প্রস্তুত। আমি তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছি এবং জানিয়েছি, খুব শীঘ্রই আমাদের সাক্ষাৎ হবে।’’
তবে ভারত এবং ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা কিছুটা গোপন পর্যায়ে থাকলেও, সেগুলিও যে গুরুত্ব সহকারে এগোচ্ছে তা স্পষ্ট হয়েছে সিএনএন-এর রিপোর্টে। জানা গিয়েছে, ভারত থেকে আমদানি হওয়া পণ্যে ২৬ শতাংশ, ইসরায়েলের ক্ষেত্রে ১৭ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের পণ্যে ৪৬ শতাংশ হারে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা রয়েছে আমেরিকার। এই শুল্ক কার্যকর হবে ৯ এপ্রিল রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে।
ট্রাম্প অবশ্য শুরু থেকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই শুল্ক নীতি একেবারে চূড়ান্ত নয়। তিনি বলেছিলেন, ‘‘যদি কোনও দেশ আমেরিকার স্বার্থে বিশেষ কিছু করে, তাহলে শুল্ক প্রত্যাহারও হতে পারে।’’ তবে এ হুঁশিয়ারির সত্ত্বেও চিনের পক্ষ থেকে এসেছে জবাবি পদক্ষেপ। ট্রাম্প চিনের পণ্যে ৩৪ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, চিনও আমেরিকার পণ্যে সমান হারে শুল্ক বসানোর কথা ঘোষণা করে। শুধু তাই নয়, চিনে ব্যবসা করা ১১টি মার্কিন সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। পাশাপাশি, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের রফতানিতেও রাশ টানা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কানাডাও মার্কিন গাড়ির উপর শুল্ক বসানোর কথা ঘোষণা করেছে। ফলে ট্রাম্পের শুল্ক নীতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য জগতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
এখন দেখার বিষয়, ভারতের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সহযোগীর সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের শেষ পর্যন্ত কোনও সমঝোতা হয় কি না। সময় খুব কম—মাত্র চার দিন। এই সময়ের মধ্যেই কী কূটনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হবে, সে প্রশ্নে আন্তর্জাতিক মহলের নজর এখন হোয়াইট হাউসের দিকেই।