আমি জাজমেন্টটা মেনে নিতে পারছি না: মমতা
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ বহাল রেখেছে। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ রায় দিয়েছে যে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া দুর্নীতি ও জালিয়াতির দ্বারা কলঙ্কিত হয়েছে। এই রায় প্রকাশের পর পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিচারপতিদের শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি বলছি যে আমি জাজমেন্টটা মেনে নিতে পারছি না।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন যে এই বিষয়ে আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
রাজনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়া
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পরে বিরোধী দলগুলির তরফ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেন, “এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই। মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
অপরদিকে, বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কড়া ভাষায় মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “অযোগ্যদের বাঁচাতে যোগ্যদের বলি দেওয়া হয়েছে। মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে বহাল রেখে ২০১৬ সালের এসএসসির পুরো প্যানেল বাতিল করেছে। এর সম্পূর্ণ দায়ভার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আমি তার অবিলম্বে পদত্যাগ ও গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।”
নবান্নে জরুরি বৈঠক
রায় ঘোষণার পরপরই নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু উপস্থিত ছিলেন এই বৈঠকে। সূত্রের খবর, আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে রাজ্য সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করার চেষ্টা করছে। এই রায় ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।