Saturday, May 24, 2025
Latestরাজ্য​

ত্রিপল দিয়ে ঘেরা কেন ত্রাণ শিবির? কিছু আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে? ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শুনল কমিশন

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হিংসার জেরে মুর্শিদাবাদ থেকে ঘরছাড়া শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন মালদার বিভিন্ন ত্রাণশিবিরে। পারলালপুর হাইস্কুলে তৈরি এক ত্রাণশিবিরে শুক্রবার যান জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা। তাঁদের সামনে ভেঙে পড়েন আশ্রয়প্রার্থীরা, তুলে ধরেন পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া ঘর, লুট হওয়া নগদ টাকা, সোনা-গয়না ও গবাদি পশু হারানোর বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা।

শিবিরে থাকা আশা মণ্ডল বলেন, “৬ টা ছাগল কুপিয়ে ব্যাগে ভরে নিয়ে গেছে ওরা।” অভিযোগ জানাতে গিয়ে তিনি লুটিয়ে পড়েন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বিজয়া কিশোর রাহাতকরের বুকে। আরেকজন, নিয়তি মণ্ডল জানান, “দু’লক্ষ টাকা আর গয়না নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।”

এই সফরের ঠিক আগে শিবির ঘিরে ত্রিপল টাঙানোর ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে কমিশনের প্রতিনিধি দল পৌঁছনোর আগেই পারলালপুর হাইস্কুলের শিবির চারপাশে ত্রিপল টাঙানো হয়। এই ঘটনায় প্রশ্ন ওঠে, কী আড়াল করার চেষ্টা চলছে? দুর্গতদের অভিযোগ, “আমাদের বন্দি করে রাখা হয়েছে। বাইরে যেতে দিচ্ছে না। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতেও বাধা দিচ্ছে পুলিশ।”

মালদার বাসিন্দা রণজয় বিশ্বাস বলেন, “ওরা যাতে বাইরে গিয়ে বলতে না পারে, তাদের কী অবস্থা, তাই ত্রিপল দিয়ে সব ঢেকে রাখা হয়েছে।” প্রশাসনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগে উত্তাল হয়ে ওঠে শিবির। অবশেষে বিকেলে খুলে দেওয়া হয় ত্রিপল।

দুর্গতদের বক্তব্য শুনে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বিজয়া কিশোর রাহাতকর বলেন, “এই সাম্প্রদায়িক হিংসায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মহিলারাই।” কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার জানান, “তাঁদের নিরাপত্তা, ফেরত যাওয়ার পরিস্থিতি, এবং সরকারের ভূমিকা খতিয়ে দেখে তবেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

শুক্রবারের পর, শনিবার মুর্শিদাবাদের সুতি, ধুলিয়ান ও সামশেরগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাওয়ার কথা রয়েছে জাতীয় মহিলা ও মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিদের।

ত্রাণশিবির ঘিরে সরকারি পদক্ষেপ, প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশ্ন, দুর্গতদের আর্তি—সব মিলিয়ে মালদার পরিস্থিতি উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় কমিশনের নজরে।