তোষণের রাজনীতি? ‘ধর্মনিরপেক্ষ কংগ্রেস’ শাসিত কর্ণাটকে মুসলিমদের সংরক্ষণ বিল
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণের প্রশ্নে ফের তীব্র বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু কর্ণাটক। রাজ্যের বিধানসভায় সদ্য পাশ হওয়া মুসলিম সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিল এবার পৌঁছেছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে। কর্নাটকের রাজ্যপাল থাওয়ারচাঁদ গেহলট বিলটিকে ‘সংবিধানবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে পাঠিয়েছেন রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য। এই সিদ্ধান্তে নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্কের ঝড় উঠেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ মার্চ কর্নাটক বিধানসভায় পাশ হয় ‘মুসলিম সংরক্ষণ বিল’। বিল অনুযায়ী, রাজ্যের সমস্ত সরকারি চুক্তি ও টেন্ডারের ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে ৪ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়ার বিধান রাখা হয়। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া আগেই জানিয়েছিলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য ঘোচাতে মুসলিমদের জন্য আলাদা সংরক্ষণ চালু করা হবে।
তবে বিধানসভায় বিলটি পেশ হওয়ার সঙ্গেই প্রবল বিরোধিতা শুরু করে বিজেপি। বিজেপি বিধায়করা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন, কেউ কেউ স্পিকারের চেয়ারে উঠে পড়ার চেষ্টা করেন, এমনকি বিলের কপি ছিঁড়ে স্পিকারের দিকে ছুড়েও দেন। তাঁদের অভিযোগ, ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ সংবিধানবিরোধী। কংগ্রেস যেহেতু নিজেকে ধর্মনিরপেক্ষ বলে দাবি করে, তাহলে শুধুমাত্র মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা সংরক্ষণ কেন?
বিলটি পেশ ও পাশ হলেও রাজ্যপাল এতদিন তা অনুমোদন না দিয়ে রাজভবনে আটকে রাখেন। তবে সাম্প্রতিককালে তামিলনাড়ুর একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, রাজ্যপাল কোনও বিল নিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য সিদ্ধান্তহীন অবস্থানে থাকতে পারেন না। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ৩০ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত না হলে বিলটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে হবে।
সেই নির্দেশ মেনেই রাজ্যপাল গেহলট এবার এই বিতর্কিত সংরক্ষণ বিল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “সংবিধান ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণের অনুমতি দেয় না। তাই এই বিল নিয়ে গুরুতর সাংবিধানিক প্রশ্ন রয়েছে।”
এখন নজর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সিদ্ধান্তের দিকে। সংরক্ষণ নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। কর্নাটকের এই সিদ্ধান্ত সেই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করল বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। রাষ্ট্রপতি এবার কী সিদ্ধান্ত নেন, তার উপর নির্ভর করছে কর্ণাটকে এই বিল আইনে পরিণত হবে কিনা।