বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করলো ভারত
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করলো ভারত সরকার। এর ফলে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য আর নেপাল ও ভুটানে পাঠানো যাবে না। বিষয়টি ইতোমধ্যেই এক সরকারি আদেশের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (CBIC)।
নতুন আদেশ অনুযায়ী, বর্তমানে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার আওতায় ভারতের মাটিতে অবস্থান করা বাংলাদেশি পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালের জুন মাসে ভারত বাংলাদেশকে এই সুবিধা দেয়, যার মাধ্যমে নেপাল ও ভুটানের মতো অভ্যন্তরীণ ভূখণ্ডবেষ্টিত (ল্যান্ডলকড) দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের রপ্তানি কার্যক্রম চালু ছিল। চার বছর ধরে এই সুবিধা বাংলাদেশের জন্য একটি কৌশলগত রপ্তানি পথ হিসেবে কাজ করছিল।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও সময়চয়ন
এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এলো যখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি চীন সফরকালে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহ — যেগুলো ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত — নিয়ে মন্তব্য করেন। বেইজিংয়ে এক আলোচনায় তিনি বলেন, “ভারতের সেভেন সিস্টার্স অঞ্চল স্থলবেষ্টিত এবং বাংলাদেশের ওপর দিয়ে সমুদ্রপথই তাদের একমাত্র ভরসা। এই বিষয়টি চীন অর্থনৈতিক প্রসারের জন্য কাজে লাগাতে পারে।”
অধ্যাপক ইউনূসের এই বক্তব্য ভারতীয় কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। যদিও পরে ঢাকায় নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান জানান, “কানেক্টিভিটির সম্ভাবনার দিকটি তুলে ধরতেই অধ্যাপক ইউনূস এমন মন্তব্য করেছিলেন এবং তাঁর বক্তব্য ছিল সৎ উদ্দেশ্যপ্রসূত।”
কূটনৈতিক সংকেত ও ভবিষ্যত প্রভাব
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারত হঠাৎ করে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে একটি কূটনৈতিক বার্তা দিতে চাচ্ছে, যা বাংলাদেশের চীনের প্রতি কৌশলগত অবস্থান ও বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া হিসেবেও দেখা যেতে পারে।