উত্তরপ্রদেশে রাস্তায় নমাজ পড়লেই বাতিল পাসপোর্ট ও লাইসেন্স
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের মিরাটে রমজানের শেষ শুক্রবারের জুমাতুল বিদা এবং ঈদুল ফিতরের নামাজ নিয়ে পুলিশ কঠোর নির্দেশিকা জারি করেছে। স্থানীয় প্রশাসন স্পষ্ট জানিয়েছে, মসজিদ ও নির্ধারিত ঈদগাহের বাইরে রাস্তায় নামাজ পড়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। এই নির্দেশ লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাস্তায় নমাজ পড়লে পাসপোর্ট ও লাইসেন্স বাতিল
মিরাটের পুলিশ সুপার (শহর) আয়ুশ বিক্রম সিং বলেন, “স্থানীয় মসজিদ বা ঈদগাহে নামাজ পড়া উচিত, রাস্তায় নামাজ পড়ার অনুমতি নেই।” পুলিশ জানিয়েছে, কেউ নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এমনকি পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল করারও শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও রাষ্ট্রীয় লোকদল (আরএলডি) নেতা জয়ন্ত সিং চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, “যদি কারও বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়, তাহলে তাদের পাসপোর্ট ও লাইসেন্স বাতিল হতে পারে এবং আদালতের অনুমতি ছাড়া নতুন পাসপোর্ট পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।”
গুজব ছড়ালে কড়া ব্যবস্থা
এই নির্দেশনার কারণে উত্তরপ্রদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে একপক্ষীয় বলে মনে করছেন। তবে মিরাটের সিনিয়র পুলিশ সুপার (এসএসপি) বিপিন তাদা জানিয়েছেন, “জেলা ও থানা স্তরে বৈঠকের পর এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ যদি গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করে, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার যেকোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে এবং আমরা পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছি।”
নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে মিরাটের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় প্রভিন্সিয়াল আর্ম কনস্টাব্যুলারি (পিএসি) এবং র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (র্যাফ) মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা
তবে এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে। কেউ একে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টা বলেও সমালোচনা করছেন। ঈদের নামাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে সব পক্ষের মধ্যে সমঝোতা জরুরি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।