Monday, November 17, 2025
Latestদেশ

কাউকে বিদেশি বলে সন্দেহ হলে ১০ দিনের মধ্যে ভারতীয় প্রমাণ করতে হবে, এসওপি অনুমোদন অসম মন্ত্রিসভায়

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: অসম সরকার অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের দ্রুত সনাক্তকরণ ও বহিষ্কারের লক্ষ্যে ‘অভিবাসী (আসাম থেকে বহিষ্কার) আইন, ১৯৫০’-এর প্রয়োগে একটি নতুন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) অনুমোদন করেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত হয়। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, নতুন এসওপি কার্যকর হলে রাজ্যে অবৈধ বিদেশিদের বিরুদ্ধে আরও দ্রুত, কার্যকর ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ সম্ভব হবে।

নতুন এসওপি অনুযায়ী, রাজ্যের প্রতিটি জেলার ডেপুটি কমিশনার কোনও ব্যক্তিকে বিদেশি হিসেবে সন্দেহ করলে তাকে ১০ দিনের নোটিশ প্রদান করবেন। সেই ব্যক্তি যদি নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যর্থ হন, তবে ডেপুটি কমিশনার সরাসরি বহিষ্কারের আদেশ জারি করতে পারবেন। এরপর ঐ ব্যক্তিকে হোল্ডিং সেন্টারে রাখা হবে এবং সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী-এর মাধ্যমে পুশব্যাকের প্রক্রিয়া শুরু হবে। বিশেষ দ্রষ্টব্য, যদি কোনও ব্যক্তিকে রাজ্যে প্রবেশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে শনাক্ত করা যায়, তাহলে নোটিস দেওয়ার প্রয়োজন নেই; বরং সরাসরি বহিষ্কারের প্রক্রিয়া কার্যকর হবে।

তবে যেসব ক্ষেত্রে ডেপুটি কমিশনার নিশ্চিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হবেন, সেক্ষেত্রে মামলা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে প্রেরিত হবে। বর্তমানে রাজ্যে প্রায় ৮২ হাজার মামলা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই দীর্ঘসূত্রিতা ও প্রশাসনিক জটিলতার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে নতুন এসওপি প্রণয়ন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, সংবিধানের ধারা ৬এ বহাল রেখেই অসম সরকার ১৯৫০ সালের এই আইন প্রয়োগে সম্পূর্ণ স্বাধীন। এই প্রথম রাজ্য মন্ত্রিসভা ঐতিহাসিকভাবে এই আইনকে পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকার স্পষ্টভাবে অবৈধ বিদেশিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে এবং রাজ্যের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে।”

১৯৫০ সালের এই আইন মূলত পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকাতে ভারতীয় সংসদ প্রণয়ন করেছিল। সরকারের মতে, নতুন এসওপি কার্যকর হলে জনস্বার্থ ও আদিবাসীদের অধিকার সুরক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।