প্রথা ভেঙ্গে ঋতুমতী অবস্থায় পুজো করলেন উষসী
কলকাতা: এখনও সমাজের কিছু মানুষ কুসংস্কারের ঘন অন্ধকারে নিমজ্জিত। কুসংস্কারের ভেঙে আমদের এগিয়ে যেতে হবে। কুসংস্কার মুক্ত সমাজ গঠনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কলকাতার এক কলেজ ছাত্রী ঋতুমতী অবস্থায় তার বাড়িতে সরস্বতী পুজো করে সেই ছবি ফেসবুকে আপলোড করেছেন।
বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই এটিকে অত্যন্ত সাহসী এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন। আবার অনেকে বদনামও করেছেন। উষসী চক্রবর্তী নামের ২৩ বছর বয়সী ওই ছাত্রীকে নেটিজেনদের একাংশ বলছেন, যত বাধাই আসুক না কেন কুসংস্কারের বেড়াজাল ভেঙে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
একাংশ ‘ট্রল’ করছেন, তাদের বক্তব্য- তিনি নারী হয়ে কি করে পুজো করলেন। তাছাড়া ঋতুমতী অবস্থায় পুজো করে ঘোরতর পাপ করেছেন, অনর্থ হয়ে যাবে, এমনকি সুনামি বা ভূমিকম্পও হয়ে যেতে পারে এই অনাচারের জন্য।
তবে সেসবে কান দিতে নারাজ উষসী চক্রবর্তী। তিনি সাফ বলছেন, ভেবেচিন্তেই এই প্রথা ভেঙ্গেছি। পিরিয়ড হয়েছে এই কথাটা বলতে আমাকে যেন লজ্জা না পেতে হয়, স্যানিটারি প্যাড যেন লুকিয়ে কিনতে না হয় বা জামার পিছনে রক্তের দাগ লেগে গেলে যেন আমাকে লজ্জায় মুখ লুকোতে না হয়। কেন আমাকে কাগজের মোড়কে স্যানিটারি প্যাড কিনতে হবে?
উষসী আরও বলেন, এই কথাগুলো আমার এবং আমার পরের প্রজন্মের মেয়েদের কাছে তুলে ধরতে চেয়েছি বলেই প্রথাটা ভেঙ্গেছি। জোর গলায় বলছি মেয়েদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম ভুল বুঝিয়ে আসা হচ্ছে। ঋতুমতী হওয়া একটা স্বাভাবিক শারীরিক অবস্থা। এতে মেয়েরা অশুচি হয়ে যায় বলে পুজো করতে পারবে না, সেটা ঘোর পাপ! অথচ যে পুরুষ পুরোহিত পুজো করছেন, তিনি যদি ধর্ষক হন তবুও সেই পুজো শুদ্ধ হয়ে গেল।
উষসী বলেন, আমি এই শুচি অশুচির নিয়ম মানবই না। মন থেকে যদি কেউ শুদ্ধ হয়, তার শুচিতা থাকে, তাহলে আর কোনও কিছুতেই সে অশুচি হয় না। কোন পুরাণ, কোন শাস্ত্রে এটা লেখা আছে ঋতুমতী অবস্থায় পুজো করা যাবে না? আমার বাড়িতে বহু শাস্ত্রের বইপত্র আছে। আমাকে কেউ দেখাতে পারবে না।

গুরুদাস কলেজ থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক এরপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে ডিজিটাল সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত।

