মমতার তোষণের রাজনীতি এবং অভিষেকের জন্য তৃণমূল ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলাম: শুভেন্দু
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র বাকযুদ্ধ অব্যাহত। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা ‘গদ্দার’ মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার তিনি সাফ জানিয়ে দেন, তাঁকে শুধু চিহ্নিতই করা হয়নি, বরং টার্গেট করা হয়েছিল। এমনকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কারণেই তিনি তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন বলে ফের অভিযোগ তুলেছেন।
‘আমাকে টার্গেট করা হয়েছিল’, মন্তব্য শুভেন্দুর
এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মুকুল রায় আর আমাকে কবে চিহ্নিত করেছে? সাল আর মাসটা জানান। ও আমাকে চিহ্নিত করেনি, বরং টার্গেট করেছিল। কারণ, আমি যখন বিনয় মিশ্র, প্রতীক দেওয়ান, সুজয়কৃষ্ণ, কুন্তল, শান্তনুদের নিয়ে চলা দুর্নীতির প্রতিবাদ করেছিলাম, তখনই আমাকে কোণঠাসা করার চেষ্টা শুরু হয়।”
তিনি আরও বলেন, “তৃণমূল এরকম ছিল না। ২০১১ সালের আগে এই দল অনেক সাদামাটা ছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের পর থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক দখল নিতে শুরু করেন। প্রবীণ নেতা সোমেন মিত্রকে সরিয়ে ডায়মন্ড হারবারের ভোটে জেতার পর থেকেই দুর্নীতির রমরমা শুরু হয়।” শুভেন্দুর অভিযোগ, “২০১৬ সালের পর থেকে একের পর এক দুর্নীতির তথ্য সামনে এসেছে। প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে একজন নাবালক ছেলে। চার্টার্ড ফ্লাইটে ঘোরে! এই চোর-বদমাশের জন্যই তৃণমূল ছাড়তে হয়েছে আমাকে।”
শুভেন্দু গদ্দার বলে কটাক্ষ অভিষেকের
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের এক সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীদের মতো গদ্দার নই। আমিই প্রথম এদের চিহ্নিত করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলাম।”
অভিষেককে পাল্টা আক্রমণ শুভেন্দুর
অভিষেকের এই মন্তব্যের পরেই পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই দুর্নীতির নায়ক এবং তাঁর হাত ধরেই তৃণমূলের চরিত্র বদলেছে। তাঁর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোষণের রাজনীতি করছেন। আর যাকে তিনি তোলার চেষ্টা করছেন, সেই ‘বাছুর’টাকে নিয়েই যত সমস্যা।”
বিধানসভা ভোটের আগে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ
শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে। তৃণমূলের তরফে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, লোকসভা ভোটের আগে এই বাকযুদ্ধ আরও তীব্র হবে। শুভেন্দু-অভিষেক দ্বৈরথ যে থামার নয়, তা এই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ থেকেই স্পষ্ট।