Wednesday, April 23, 2025
রাজ্য​

‘মমতাই বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারী-রোহিঙ্গাদের এনে ৬২ লাখ ভুয়ো রেশন কার্ড বানিয়েছিলেন’

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রবল বিতর্ক শুরু হয়েছে। তৃণমূল নেত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, পরিকল্পিতভাবে বাংলার আসল ভোটারদের নাম বাদ দিয়ে বাইরের রাজ্যের মানুষদের ভোটার তালিকায় ঢোকানো হচ্ছে। তাঁর দাবি, এই কাজের জন্য একটি বিশেষ এজেন্সি নিযুক্ত করা হয়েছে, যারা ভোটার তালিকায় কারচুপি করছে। তবে, বিজেপি ও কংগ্রেস একযোগে তাঁর এই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে এবং পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধেই ভুয়ো ভোটার তৈরির অভিযোগ এনেছে।

মমতার বিস্ফোরক অভিযোগ

বৃহস্পতিবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভোটের আগে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ভোটার তালিকা পরিশোধন করতে হবে। না হলে নির্বাচনে যাওয়ারই প্রয়োজন নেই। বাংলার ভোটারদের নাম বাদ দিয়ে অন্য রাজ্যের মানুষের নাম ঢোকানো হচ্ছে।’’ তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ বিলিয়ন মাইন্ডস’ নামে একটি সংস্থা ‘ইন্ডিয়া ৩৬০’-এর অধীনে ডেটা অপারেটরদের মাধ্যমে এই কারচুপি করছে।

মমতা দাবি করেন, একই এপিক নম্বরে (ভোটার আইডি নম্বর) হরিয়ানা, পাঞ্জাব, রাজস্থান ও বিহারের মানুষদের নাম তোলা হচ্ছে, যাতে বাংলার ভোটাররা ভোট দিতে না পারেন। পাশাপাশি, মুর্শিদাবাদের ভোটারদের নাম উত্তর ২৪ পরগনার তালিকায় তুলে দেওয়া হয়েছে, যাতে ভোটের আগে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে ভোটারদের স্থানান্তর করা যায়।

বিজেপি ও কংগ্রেসের পাল্টা আক্রমণ

মমতার এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ও কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। বিজেপির দিলীপ ঘোষ পাল্টা অভিযোগ করেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের এনে ৬২ লক্ষ ভুয়ো রেশন কার্ড বানিয়েছিলেন। এখন বাংলায় ৪০-৫০ লক্ষ ভুয়ো ভোটার রয়েছে। আমরা সেই তালিকা বাতিল করব।’’

অধীররঞ্জন চৌধুরীও একই সুরে বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে বুথে বুথে তৃণমূলের লোকজনই নিয়োগ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে কারচুপি কীভাবে সম্ভব? বরং তৃণমূলের হাতেই ৩৫-৪০ লক্ষ ভুয়ো ভোটার রয়েছে।’’

বিধানসভা ভোটের আগে বাড়তে পারে সংঘাত

রাজ্যের শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে ভোটার তালিকা নিয়ে এই তীব্র রাজনৈতিক সংঘাত ভোটের আগে আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ তদন্তের দাবি জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে বিজেপি ও কংগ্রেস নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ ভূমিকার উপর জোর দিয়েছে।