ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ‘এক দেশ এক ভোট’ সম্পর্কে জনমত নেবে জেপিসি
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ভারতে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কারের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি কার্যকর করার পথে অগ্রসর হচ্ছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে জনমত সংগ্রহ করতে একটি বিশেষ ওয়েবসাইট চালু করতে চলেছে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)। জেপিসির চেয়ারম্যান তথা বিজেপি সাংসদ পিপি চৌধরি জানিয়েছেন, ‘‘আমরা এই বিষয়টিতে পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে এগোতে চাই। তাই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
বিরোধিতার মাঝেও বিল পেশ
গত ১৭ ডিসেম্বর লোকসভায় কেন্দ্র ‘এক দেশ এক ভোট’ সংক্রান্ত বিল পেশ করে। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল এই বিষয়ে ১২৯তম সংবিধান সংশোধনী বিল এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আইন (সংশোধনী) বিল সংসদের নিম্নকক্ষে পেশ করেন। তবে বিরোধী দলগুলি এই বিলের তীব্র বিরোধিতা করে এবং ডিভিশনের দাবি তোলে।
ভোটাভুটি এবং ফলাফল
বিল পেশের পরেই সংসদে ভোটাভুটি হয়। প্রথমে ‘ইলেকট্রনিক ভোটিং সিস্টেম’ এবং পরে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোটাভুটিতে সরকারের পক্ষে ভোট দেন ২৬৯ জন সাংসদ এবং বিপক্ষে ১৯৮ জন।
বিল পাসে চ্যালেঞ্জ এবং যৌথ কমিটির ভূমিকা
এই বিল পাসের জন্য লোকসভা এবং রাজ্যসভায় দুই-তৃতীয়াংশ সাংসদের সমর্থন প্রয়োজন। অর্থাৎ, লোকসভায় ৩০৭ এবং রাজ্যসভায় ১৫৮ সাংসদের সমর্থন জরুরি। বর্তমানে নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই, যার ফলে কেন্দ্র আপাতত ‘ধীরে চলো’ নীতি অবলম্বন করছে।
বিরোধীদের আপত্তি ও জনমত সংগ্রহের উদ্যোগ
বিরোধী দলগুলি মনে করছে, ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি কার্যকর হলে আঞ্চলিক দলগুলির ভূমিকা কমে যেতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ওপর প্রভাব পড়তে পারে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি নিয়ে স্বচ্ছতা রাখতে এবং জনগণের মতামত সংগ্রহ করতে উদ্যোগী হয়েছে।
অমিত শাহের প্রতিক্রিয়া
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বিলের খসড়া নিয়ে সংসদের যৌথ কমিটিতে বিস্তারিত আলোচনা চান। এজন্য গত ১৮ ডিসেম্বর যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গঠন করা হয়েছে।
নাগরিক মতামতের গুরুত্ব
জেপিসি চেয়ারম্যান পিপি চৌধরি জানিয়েছেন, জনসাধারণকে ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতির ওপর তাদের মতামত জানানোর সুযোগ করে দিতেই এই ওয়েবসাইট চালু করা হচ্ছে। এতে জনগণ সরাসরি তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারবেন, যা বিল পর্যালোচনার সময় বিবেচনায় আনা হবে।
নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সহজতর করবে
‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি কার্যকর করা হলে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নির্বাচনের তারিখ একত্রিত করা হবে, যা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সহজতর করবে।