রাজধানীতে বড়সড় হামলার ছক? ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার ৩৫০ কেজি বিস্ফোরক, কাশ্মীরে ধৃত ডাক্তারের থেকে মেলে হদিস
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: দিল্লির অদূরে ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার হল বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক পদার্থ। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের জেরায় উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রাজধানী সংলগ্ন ফরিদাবাদ থেকে প্রায় ৩৫০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃত কাশ্মীরের চিকিৎসক আদিল আহমেদকে জেরা করেই এই বিস্ফোরকের হদিস মেলে।
হরিয়ানা পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকটি সম্ভবত অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, যা আরডিএক্স তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। এত বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক কীভাবে এনসিআর অঞ্চলে এল, কারা সরবরাহ করল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ ও গোয়েন্দারা।
জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগে কাশ্মীরে অস্ত্র পাচারের মামলায় গ্রেফতার হয় আদিল আহমেদ র্যাদার। পেশায় চিকিৎসক আদিলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহের যোগের অভিযোগ উঠেছে। উপত্যকায় তার নামে থাকা একটি লকার থেকে একটি একে-৪৭ রাইফেল ও আরও কিছু অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়।
পুলিশের ধারণা, ফরিদাবাদে পাওয়া বিস্ফোরকগুলি কাশ্মীর থেকেই পাঠানো হয়েছিল। তবে সেগুলি আদিল নিজে নিয়ে এসেছিলেন, নাকি কোনও নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তদন্তে উঠে এসেছে আরও এক নাম — মুজামিল শাকিল, পুলওয়ামার বাসিন্দা এবং পেশায় তিনিও চিকিৎসক। অভিযোগ, তিনিও অস্ত্র ও বিস্ফোরক পরিবহণে যুক্ত। বর্তমানে তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের এক সূত্র জানিয়েছে, সাম্প্রতিক অতীতে এত বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকের সঙ্গে উপত্যকার যোগ আগে কখনও ধরা পড়েনি। তদন্তকারীরা আশঙ্কা করছেন, রাজধানী বা সংলগ্ন এলাকায় বড়সড় কোনও সন্ত্রাসবাদী হামলার ছক থাকতে পারে।
তবে এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দিষ্ট জঙ্গি সংগঠনের নাম বা যোগের প্রমাণ মেলেনি। তদন্তকারীরা এই ঘটনার পেছনে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস জাল রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন।
প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল পহেলগাম হামলার পর থেকেই কাশ্মীর উপত্যকায় নিরাপত্তা ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তে অনুপ্রবেশ রুখতে সেনা ও প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে। তবুও রাজধানীর কাছাকাছি এত বড় পরিমাণ বিস্ফোরক পৌঁছে যাওয়ায় উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন — নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ফাঁক কোথায়?
পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, “এই ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, উপত্যকার বাইরে বিস্ফোরক ও অস্ত্র পাচারের একটি সংগঠিত চক্র কাজ করছে। সেটিকে চিহ্নিত করা এখন তদন্তের মূল লক্ষ্য।” গোটা বিষয়টির তদন্ত চলছে।


