Thursday, April 24, 2025
আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে নির্বাচন এলেই সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন শুরু হয়, স্বাধীনতার ৫২ বছরে দেশত্যাগ করেছেন ১১ শতাংশ মানুষ: রানা দাশগুপ্ত

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: পুজোর মরসুমে বাংলাদেশে একের পর এক প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা সামনে এসেছে। এবার এ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত (Rana Dasgupta)। সমকালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন এলেই দেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা-নির্যাতন শুরু হয়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে এবার এ বিষয়ে সরকারকে যথেষ্ট আন্তরিক বলেই মনে হচ্ছে। দেখা যাক, পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়।’

রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘এবারও ভোটের আগে-পরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা-নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। এরই মধ্যে দেশের কয়েকটি স্থানে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল। তবে এবার সরকার এ বিষয়ে আন্তরিক বলেই মনে হচ্ছে। এর পরও বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’

ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পুজোমণ্ডপ ও মন্দিরে হামলা এবং প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

এ প্রসঙ্গে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা তো ঘটছে। আমরাও আমাদের সাধ্যমতো প্রতিবাদ করার চেষ্টা করছি। এখন দেখা যাক, পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়।’

প্রায় সময়ই নির্যাতিত হয়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা দেশত্যাগ করেন। এ বিষয়ে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘আমরা দেখেছি, ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের সময় তৎকালীন পূর্ববঙ্গে সমগ্র জনগোষ্ঠীর ২৯.৭ ভাগ ছিল ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের সময় এ সংখ্যা নেমে আসে ১৯ থেকে ২০ ভাগে। এ বছর পরিসংখ্যান ব্যুরো দেশের জনসংখ্যার যে তথ্য প্রকাশ করেছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী ৯.১ ভাগে নেমে এসেছে। অর্থাৎ স্বাধীনতার ৫১-৫২ বছরে দেশের প্রায় ১১ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ হারিয়ে গেল– এরা কারা? এ দেশে গণতন্ত্র ও সমাজ প্রগতির পক্ষে নির্ভীক সৈনিক হিসেবে আন্দোলন করেছিলেন যারা। স্বাধীন বাংলাদেশেও যারা গণতন্ত্র এবং সমাজ প্রগতির পক্ষে কাজ করেছেন। কেন এই সংখ্যালঘুরা দেশত্যাগ করছেন? আজ পর্যন্ত কোনো সরকার এর কারণ নির্ণয় করতে পারেনি। এ কারণেই আমরা কেন সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী এ দেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে কিংবা কেন তারা দেশত্যাগ করছে বা দেশে থাকতে পারছে না– সে জন্য একটি কমিশন গঠনের দাবিও তুলেছিলাম। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সরকারেরই দায়িত্ব। এটা যত দ্রুত করা যায়, ততই মঙ্গল।’