‘লোকের দুটো বউ থাকতে পারে, আমার একটা বান্ধবী থাকতে পারে না!’, অর্পিতা প্রসঙ্গে সদর্পে বললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পর অবশেষে জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ও বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। আর ফেরার পরদিনই সংবাদমাধ্যম ও নিজের বিধানসভা এলাকার মানুষদের উদ্দেশে লিখেছেন খোলা চিঠি। সেই চিঠিতেই উঠে এসেছে তাঁর বক্তব্য — বন্ধুত্ব, দুর্নীতির অভিযোগ এবং নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে তাঁর অবস্থান।
অর্পিতা প্রসঙ্গে সরাসরি স্বীকারোক্তি
সংবাদমাধ্যমে আলোচিত তাঁর ‘বিশেষ বান্ধবী’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে এবার মুখ খুললেন পার্থ। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য — “অর্পিতা আমার বান্ধবী। একজন মহিলাকে অসম্মান করা খুব সহজ। সংবাদমাধ্যম রং চড়িয়ে তাকে হেয় করেছে। আমার স্ত্রী প্রয়াত। তার পর যদি কোনও মহিলা আমার সঙ্গে পারিবারিক বন্ধুত্ব করেন, তাতে আপত্তি কেন থাকবে?”
অভিনেত্রী অর্পিতার মর্যাদা নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। বলেছেন, “অর্পিতা শুধু আমার বান্ধবী নন, তিনি একজন অভিনেত্রী। ৩০-৩৫টি ওড়িয়া ছবিতে অভিনয় করেছেন। তাকে যে ভাবে অসম্মান করা হয়েছে, তা অন্যায়।”
এছাড়া শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “কারও যদি দু’জন স্ত্রী থাকতে পারে, আমার এক জন বান্ধবী থাকতে পারবে না কেন?”
টাকার মালিক কে?
অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা নগদ উদ্ধার করেছিল ইডি। এই টাকার সঙ্গে নিজের কোনও যোগ নেই বলেই দাবি করেছেন পার্থ। তাঁর বক্তব্য — “আমার বাড়ি থেকে তো কোনও টাকা পাওয়া যায়নি। বান্ধবীর বাড়ি থেকে পাওয়া গেছে। বান্ধবীই তার উত্তর দেবে।”
তবে বর্তমানে অর্পিতার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই বলেও জানান তিনি।
দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন পার্থ
নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে বহুদিন ধরেই বিরোধীদের নিশানায় ছিলেন তিনি। কিন্তু জেল থেকে বেরিয়ে এবার সাফ জানালেন, “কোনও দুর্নীতি হয়নি। আমি শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন কেউ দুর্নীতির অভিযোগ আনেনি। ২০২১ সালে পদ ছাড়ার পরেই হঠাৎ এত অভিযোগ উঠল কেন? ভুল হতে পারে, বেনিয়ম হতে পারে, কিন্তু তা দুর্নীতি নয়।”
বিধায়ক তহবিল ফেরত দিতে চান
পার্থ জানান, জেলে থাকার কারণে বিগত সাড়ে তিন বছরে নিজের বিধায়ক এলাকার উন্নয়নে তেমন কাজ করতে পারেননি। তাই তিনি নিজের বিধায়ক তহবিলের অর্থ ফেরত দিতে চান। কিছু অংশ রাখলেও, বাকি অর্থ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন
তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে আগেই দল থেকে সাসপেন্ড করেছে। তবে চিঠিতে পার্থ কোনও তীব্র রাজনৈতিক মন্তব্য করেননি। শুধু লিখেছেন, “বেহালা পশ্চিমের মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। যেভাবে তাঁরা আমার পাশে থেকেছেন, তা আমি কোনওদিন ভুলব না।”


