Monday, November 17, 2025
Latestআন্তর্জাতিক

‘ইসলামি সেনা’ তৈরি করছে বাংলাদেশ, টার্গেট ‘গাজওয়া-ই-হিন্দ’

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ‘গাজওয়া-ই-হিন্দ’ এর দিকে এগোচ্ছে বাংলাদেশের মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার? এক শীর্ষ সরকারি উপদেষ্টার সাম্প্রতিক প্রকাশ্যে দেওয়া বক্তব্যে এমনটাই স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে একটি নতুন আধাসামরিক বাহিনী—ইসলামিক রেভল্যুশনারি আর্মি (IRA)—গঠনের প্রথম ধাপ শুরু হয়ে গেছে।

৮,৮৫০ জনের প্রশিক্ষণ চলছে

২০ অক্টোবর সামাজিক মাধ্যমে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ শোজিব ভূঁইয়া জানান, বাংলাদেশজুড়ে কয়েকটি কেন্দ্রে মোট ৮,৮৫০ জনকে মার্শাল আর্ট, আগ্নেয়াস্ত্র চালনা, তায়কোয়ানডো ও জুডোতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এই মন্তব্যের পর থেকেই বিষয়টি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দেশ ও বিদেশে।

ভারতীয় গোয়েন্দাদের পূর্বাভাস সত্যি হচ্ছে

ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি গত কয়েক মাস ধরে সতর্ক করেছিল যে, ইউনুস সরকার জামাত-ই-ইসলামি ও আইএসআই-এর প্রভাবে একটি নতুন ইসলামিক বাহিনী গঠন করছে।

এই IRA-র কাঠামো নাকি ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (IRGC)-এর আদলে তৈরি করা হচ্ছে—যেখানে ধর্মীয় নীতি রক্ষায় ‘নৈতিক পুলিশিং’-এর ভূমিকা থাকবে।

ভারতের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বাহিনীর মূল লক্ষ্য শুধু বাংলাদেশে ইসলামিক রাষ্ট্র কায়েম নয়, বরং ভারতের বিরুদ্ধে আগ্রাসী অবস্থান গ্রহণ করা।

সম্প্রতি জামাত নেতা ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মহম্মদ তাহের নিউইয়র্কে এক সভায় ঘোষণা করেন, “৫ মিলিয়ন জামাত যুবক ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।” তিনি বলেন, “১৯৭১ সালের কলঙ্ক মোছা হবে, এবং ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে গজওয়া-এ-হিন্দ বাস্তবায়ন করা হবে।”

আইএসআই-এর গভীর প্রভাব

নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে এখন কার্যত পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত। শেখ হাসিনার হারানোর পর থেকেই ইসলামাবাদ ঢাকাকে ‘১৯৭১-পূর্ব মানচিত্রে’ ফেরানোর পরিকল্পনায় নেমেছে।

বর্তমানে ৭টি প্রশিক্ষণ শিবিরে মোট ৮,৮৫০ জন প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, যাদের মধ্যে অনেকেই অবসরপ্রাপ্ত প্রো-পাকিস্তানি বাংলাদেশ সেনা কর্মকর্তা। শিগগিরই আরও কয়েকটি নতুন ক্যাম্প স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

সূত্র মতে, মোট ১,৬০,০০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে—যা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বর্তমান সদস্যসংখ্যার সমান।

অস্ত্র ও অর্থ আসছে পাকিস্তান থেকে

ইউনুস সরকারের সিদ্ধান্তে সমুদ্রপথে পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ পুনরায় চালু হয়েছে। এরপর থেকেই বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ প্রবেশ করেছে।

এগুলি জামাত-নিয়ন্ত্রিত বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সংরক্ষণ করা হচ্ছে, এবং প্রয়োজনে খোলাখুলিভাবেই প্রশিক্ষণ শিবিরে সরবরাহ করা হচ্ছে।

IRA গঠনের প্রকাশ্য ঘোষণা

২০২৪ সালের ডিসেম্বরেই অ্যান্টি-ডিসক্রিমিনেশন স্টুডেন্ট মুভমেন্ট নামে ইউনুসপন্থী ছাত্র সংগঠনটি ফেসবুকে ঘোষণা করেছিল যে তারা একটি মিলিশিয়া বাহিনী “IRA” গঠন করছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যুবকদের নাম নথিভুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়, এবং বলা হয় যে প্রাথমিকভাবে এক মাসব্যাপী সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যার দায়িত্বে থাকবে সেনা ও আধাসেনা বাহিনী।

সেনা ও সরকারের মধ্যে বিভাজন বাড়ছে

বর্তমানে বাংলাদেশ সেনা ও সরকারের মধ্যে সম্পর্ক দ্রুত অবনতির দিকে। আদালতের নির্দেশে বহু সেনা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা গ্রেফতার হয়েছেন, যারা মূলত শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

এতে সেনাবাহিনীর ভেতরেও বিভাজন তৈরি হয়েছে, এবং একাংশ IRA গঠনের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে বলে সূত্রের খবর।

সব মিলিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য উদ্বেগজনক।

ইসলামিক রেভল্যুশনারি আর্মি (IRA)-র গঠন কেবল বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার জন্য নয়, ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্যও গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গাজওয়া-ই-হিন্দ হল একটি ইসলামিক ভবিষ্যদ্বাণী, যেখানে বলা হয়েছে যে ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে একটি যুদ্ধ হবে এবং এই যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় ঘটবে। এটি মুসলিমদের নবী মহম্মদ (সাঃ) এর একটি কথিত ভবিষ্যদ্বাণী।

তথ্যসূত্র: তেলেঙ্গানা টুডে