Friday, December 13, 2024
আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে লাগাতার মূর্তি ভাঙচুর, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে গ্রেফতার ২

কলকাতা ট্রিবিউন ডেক্স: হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা ও জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মধ্যে সহিংসতার আশঙ্কায় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বাড়ছে। ইতিমধ্যে ফরিদপুর, গোপালগঞ্জের চরপাড়া, হবিগঞ্জের মাধবপুর,টাঙ্গাইল, ঝিনাইদহ ও ঝালকাঠিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে বাগেরহাটের রামপালে এক মহিলা ও নড়াইলের কালিয়ায় এক পুরুষকে গ্রেফতার করে পুলিশ জেলে পাঠিয়েছে। 

উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হতে পারে। এর কয়েক দিন পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করে বিএনপির ওপর দোষারোপ করতে পারে। এমন বাস্তবতায় সংখ্যালঘুদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

গত ৭ অক্টোবর সময় টিভি এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।

ঝালকাঠি জেলা সদরের চর কুতুবনগর গ্রামের পাল বাড়ির মন্দিরের প্রতিমা ও মৃৎশিল্পের জিনিসপত্র ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটেছে।

চরকুতুবনগর গ্রামের পাল বাড়ির মন্দিরে ভাঙচুর হওয়া প্রতিমা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মাসুম খাঁ (৩৫)-কে আটক করেছে পুলিশ। মাসুম উপজেলার নূরুল্লাপুর গ্রামের জলিল খাঁর ছেলে। তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করছে তার পরিবার।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারপ্রধান ধীরেন পাল (৫৫) বলেন, শনিবার ভোরে অস্ত্র নিয়ে মাসুম প্রথমে ঘরের দরজায় আঘাত করে। পরে মনসা মন্দিরে হামলা করে তিনটি প্রতিমা ভাঙচুর করে। এ ছাড়াও বাড়িতে তৈরি মাটির চারি (বড় পাত্র)সহ বিভিন্ন জিনিস ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়।

ধীরেন পালের স্ত্রী গীতা রানী পাল (৫০) বলেন, ‘আমাদের জাগ্রত মন্দির। আমিই রোজ মায়ের পূজা করি। আমাদের হৃদয়ে আঘাত দিয়েছে মাসুম।’

এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মাসুমের চাচা হাতেম খাঁ বলেন, ‘আমার ভাইয়ের ছেলে দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ। মাঝেমধ্যেইে তাকে বাড়িতে বেঁধে রাখি।’

এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ঝালকাঠি শহরের হিন্দু সংগঠনের নেতারা। তাদের মধ্যে জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তরুণ কুমার কর্মকার বলেন, আশপাশের গ্রামের নারীসহ বিভিন্ন লোকজনও এর আগে ওই হামলাকারীর আক্রমণের শিকার হয়েছে। মানসিক ভারসাম্যহীন বলে এখন তার অপরাধ ঢাকার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।

ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, ঘটনার পর শহরে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত যুবককে আটক করা হয়েছে। আটক যুবক মানসিক ভারসম্যহীন কি না, তা খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গত ৬ অক্টোবর জাতীয় দৈনিক আজকের পত্রিকা এক প্রতিবেদনে জানা যায় যে, নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার কালিয়ায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে অনিমেষ বিশ্বাস (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। গত ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয়রা আটক করে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করে। অনিমেষ উপজেলার কলাবাড়ীয়া ইউনিয়নের কালীনগর গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে কালীনগর গ্রামের জালাল শেখের দোকানের সামনে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে ধর্ম নিয়ে অনিমেষের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কটূক্তি করেন তিনি।

ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এ সময় অনিমেষ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টার করলে রাত ১১টার দিকে স্থানীয় লোকজন তাঁকে আটক করে নড়াগাতী থানা-পুলিশে সোপর্দ করে।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কবি রাধাপদ রায়ের (৮০) ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত হয়ে তিনি নাগেশ্বরী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে উপজেলার ভেতরবন্দ ইউনিয়নে নিজ গ্রামে প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম (৩৮) নামে যুবক কবির ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। 

বিশিষ্ট সাংবাদিক পুলক ঘটক তাঁর ফেসবুক পেইজে এক পোষ্টে তিনি উল্লেখ করেন যে,গত ২৬ সেপ্টেম্বর

 বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা গ্রামে রুপালী দাস নামে এক গৃহবধুর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

তৌহিদি জনতার এই সফল তৎপরতার খবর বাংলাদেশের মিডিয়া গোপন করেছে। 

অপরিচিত কিছু অনলাইনে “ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল” করার সংবাদটি দিয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে আজ বাগেরহাট জেলা পু্লিশ সুপার আবুল হাসনাত খান এবং রামপাল থানার ওসি আশরাফুল আলমের সাথে আমি কথা বলেছি। যতদূর বুঝলাম, মহিলাকে গ্রেপ্তার করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ঠেকাতে পারায় প্রশাসন সন্তোষ্ট ও গর্বিত।

ওসি আমাকে বলেছেন, “সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কাছাকাছি গিয়েছিল।” তিনি জানিয়েছেন, ২৪ তারিখের ঘটনা, ২৬ তারিখ মামলা হয়েছে এবং রুপালীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২৭ তারিখ সেখানে পুলিশের উদ্যোগে শান্তি ও সম্প্রীতি সমাবেশ হয়েছে। সমাবেশে স্থানীয় গণপ্রতিনিধি, মওলানাবৃন্দ এবং হিন্দু নেতৃবৃন্দসহ বহু মানুষ ছিলেন। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।

২৪ তারিখ কি ঘটেছিল? রুপালী সকাল ৮ টায় গৌরম্ভা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে ডিপ টিউব ওয়েল থেকে পানি নিতে গেলে সেখানে মোমিনা বেগম নামে এক মহিলার সাথে ঝগড়া বাধে। ঝগড়ায় মোমিনা হিন্দুদের ধর্ম নিয়ে কি কি প্রশংসাসূচক বাক্য বলেছেন তা অবিবেচ্য। এর প্রতিবাদ করার হিম্মত দেখানো হিন্দুদের অন্যায়। কিন্তু মোমিনার অভিযোগ, রুপালী নাকি ঝগড়ার সময় ইসলাম ধর্মের নবীকে নিয়ে কটুক্তি করেছেন; যা আমলযোগ্য। এ নিয়ে ২৫ তারিখ সালিশ বসে, রুপালী অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু মুরুব্বিদের নির্দেশে তাঁকে মোমিনার কাছে পা ধরে মাপ চাইতে হয়। ধরে নেওয়া হয়েছিল, বিষয়টি মিমাংশা হয়েছে। কিন্তু পরদিন গায়েবী তৎপরতায় উত্তেজনা বেড়ে যায়। তৌহিদি জনতা মিছিলসহকারে রুপালী দাসের বাড়ির দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ ঐ গৃহবধুকে আটক করে পরিস্থিতি ঠান্ডা করে। পরে ইয়াসিন খন্দকার নামে এক ব্যক্তির মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

রুপালী যেহেতু ফেসবুকে কোনোকিছু লেখেননি এবং কোনোপ্রকার ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে ধর্ম সম্পর্কে উচ্চবাচ্চ করেননি, তেমন কোনো প্রমাণও নেই – তাই তার নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহারের সুযোগ ছিল না। মামলা হয়েছে বাংলাদেশ দন্ডবিধির ২৯৮, ১৫৩ এবং ৫০৬ ধারায়। ধর্মানুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে কোন বাক্য বা শব্দ বিকৃত বা অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে ধর্মবিশ্বাসে আঘাত করা হলে তা ২৯৮ ধারার আওতায় পরে। এই অপরাধ প্রমাণিত হলে এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। তবে আমার জানামতে এই অভিযোগে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে না। তদন্তের পর আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে তারপর গ্রেপ্তার করা যায়। আর দন্ডবিধির ১৫৩ ধারার অভিযোগ হল, “জেনে বুঝে এমন কোনও কিছুতে উস্কানি দেওয়া, যাতে হিংসা ছড়াতে পারে।” এই জেনে বুঝে উস্কানি দেওয়ার কাজটি সেখানে কারা বা কোন পক্ষ করেছে তা বিবেচ্য। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ রাস্ট্র ব্যবস্থা নেবে, নাকি উল্টো রুপালীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে উস্কানিদাতাদের শান্ত করবে? এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে কোন দিকে যাবে – সময় থাকতে বুঝতে হবে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশকে। দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারার অভিযোগ হল, “অপরাধমূলক হুমকি” প্রদান। এই “অপরাধমূলক হুমকী” প্রদানের সাহস এবং সামর্থ্য রুপালীদের কতটুকু আছে, এই অপরাধটি সেখানে কারা করেছে এবং করে যাচ্ছে তা সহজবোধ্য। রাস্ট্র এবং সমাজ যদি ইচ্ছে করেই বুঝতে না চায়, তবে ইউটিউবে এবং ফেসবুকে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য কন্টেন্ট তাদের সামনে খুলে দেখালেও তারা দেখবে না, বুঝবে না। দেশটা শেষ পরিণতির দিকে গেলে একদিন কোন রাষ্ট্রকে কারা বন্ধু হিসেবে পছন্দ করবেন? এখন যেমন রাজনীতিতে কে কাকে বন্ধু হিসেবে পছন্দ করছে তার ভালমন্দ মূল্যায়নের প্রয়োজন এবং নিজেদের দিকে ফিরে তাকানোর অবকাশ কারও নেই! শুধু নিজের সুবিধার জন্য উপস্থিত মিত্র দরকার!

বাংলাদেশে এই যে ঘটনাগুলো ঘটছে এর বিরুদ্ধে হিন্দুদের সংগঠনগুলোর প্রতিবাদ করার শক্তি ও সামর্থ্য কতটুকু আছে? 

ওসি আমাকে বলেছেন, রুপালীকে গ্রেপ্তারের পর “শান্তি ও সম্প্রীতি” সমাবেশে বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা সেখানে থেকে কি অর্জন করেছেন? প্রশাসনের এবং সেখানকার সুশীল সমাজের লোকজনও উপস্থিত ছিলেন। তারা কি সবাই “তৌহিদি জনতার” দাবির সঙ্গে একমত হয়ে ফিরেছেন? রুপালী এখনো জেলে কেন? এই মামলা তো জামিনযোগ্য। সাম্প্রদায়িক উস্কানির মিছিলে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে?

আরেকটি দিক বিবেচ্য। তা হল, বিষয়টিকে হিন্দু বনাম মুসলমানের লড়াই হিসেবে দেখবেন কিনা? এগুলোকে কতদূর নিয়ে যাবেন? তাতে কারা জয়ী হবে, কার উপকার হবে? আমি বাংলাদেশের বহু জায়গায় ঘুরেছি। অনেক জায়গায় হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রাম এখনো আছে। আবার এমনও গ্রাম আছে, যেখানে একটি মাত্র হিন্দু পরিবার। ঐ একটি হিন্দু বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে যদি কেউ তার ধর্ম নিয়ে যাচ্ছেতাই বলে, তবে তার পক্ষে মিছিল করবে কে? হিন্দুরা? তারা বাড়িসুদ্ধ মোটে ৭ জন লোক? অন্যায়ের বিরুদ্ধে যদি মানুষ না দাঁড়ায়, যদি হিন্দু-মুসলমান বিভেদ করে, তবে অন্যায়কে প্রতিহত করা যায় না। সংখ্যালঘুর উপর আক্রমণ যদি সংখ্যালঘুর একার লড়াই হয়, তবে বাংলাদেশ হেরে যাবে বলে সাংবাদিক মূলক ঘটক তার মন্তব্যে উল্লেখ করেন।

ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময়ে মুন্সীগঞ্জের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল, কুমিল্লার শিক্ষক শঙ্কর দেবনাথ, সুনামগঞ্জের সমাজকর্মী ঝুমন দাস, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৎসজীবী রসরাজ দাস, রংপুরের কবিরাজ টিটু রায় , পটুয়াখালীর ছাত্র জয়দেব শীল ও শ্রীমঙ্গলের প্রীতম দাসের এর বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতির আঘাতের অভিযোগ এনে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

গত ১ অক্টোবর জাতীয় দৈনিক কালবেলা এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে,মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব স্থানীয় এমপি মৃণাল কান্তি দাসকে অকথ্য ভাষায় ভর্ৎসনা ও সাম্প্রদায়িক আক্রমণ করেন।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বিপ্লব এমপি মৃণালকে উদ্দেশ করে মালাউন, নপুংশক, চাঁড়ালসহ অশ্রাব্য ভাষায় বক্তব্য দেন। এরপর সেই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এদিকে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে এমপি মৃণালকে নিয়ে ফের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন মেয়র বিপ্লব। এদিকে গত ২ অক্টোবর বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সাম্প্রদায়িক ভাষায় গালিগালাজের জন্য মেয়র ফয়সাল বিপ্লবের বহিষ্কার দাবি করে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানান।

গত ৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় শীর্ষ “দৈনিক প্রথম আলো” এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, ‘এখন জাতীয় সংসদে ২২ জন সংখ্যালঘু সংসদ সদস্য। কিন্তু এই ২২ জন কার জন্য কবে কী ভূমিকা রাখলেন, আজ পর্যন্ত আমরা জানতেও পারলাম না।’

গত ৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নারিন্দার মাধ্ব গৌড়ীয় মঠ এবং রমনা কালীবাড়ি পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে এসব কথা বলেন রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘আশির দশকে যখন আমরা জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে আমাদের অংশীদারত্ব চাওয়া শুরু করেছিলাম, তখন সংসদে সংখ্যালঘু সদস্য ছিলেন মাত্র দুজন—সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও সুধাংশু শেখর হালদার। তাঁরা তখন সংসদে আমাদের অধিকার ও ন্যায্যতার প্রশ্নে সোচ্চার ছিলেন। আজ সংসদে সংখ্যালঘু সদস্য ২২ জন। তাঁরা গত ১৪ বছরে কিছুই করলেন না আমাদের জন্য।’

রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘সম্প্রতি পাকিস্তানে একটি মন্দির ধ্বংসের প্রতিবাদে সেখানকার মাত্র একজন সংখ্যালঘু পার্লামেন্ট মেম্বার তাঁদের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে উচ্চ কণ্ঠে প্রতিবাদ করেছেন। তাঁর প্রতিবাদের ফলে পাকিস্তানের তৎকালীন ইমরান খানের সরকার সেখানকার সংখ্যালঘুদের কাছে ক্ষমা চেয়ে মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। কথা ছিল, মাঠের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বলটিকে আমরা পার্লামেন্টের সামনে নিয়ে যাব আর সেখান থেকে আমাদের পা থেকে বল নিয়ে সংসদ সদস্য বন্ধুরা সংসদের ভেতরে সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষায় ভূমিকা রাখবেন।’

রানা দাশগুপ্ত আরও বলেন, ‘তাঁদের (সংসদ সদস্যরা) পার্লামেন্টে পাঠানোর জন্য আমরা যথাযথ ভূমিকা পালন করেছি। কিন্তু পার্লামেন্টে যাওয়ার পর তাঁরা আমাদের কথা বেমালুম ভুলে গেছেন। তাই তাঁদের ওপর ভরসা না করে আমাদের রাজপথের আন্দোলনের ওপরই নির্ভর করতে হবে। সম–অধিকার ও সমমর্যাদা ফিরে পাওয়ার আন্দোলনে এ ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।’