Thursday, November 13, 2025
Latestদেশ

অসমের কাছাড়ে কিশোরীকে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে আনামুল হক লস্করের ২০ বছরের কারাদণ্ড

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: অসমের কাছাড় আদালত ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে ২৪ বছর বয়সী যুবক আনামুল হক লস্করকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। আনামুল হক লস্করকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। কাছাড় আদালত (অতিরিক্ত দায়রা জজ, বিশেষ জজ, পকসো) ১৩ অক্টোবর, ২০২৫ এই রায় দেয়।

আনামুল হক লস্কর উধারবন্দ থানার অন্তর্গত ডুমুরঘাট এলাকার বাসিন্দা। ২০২৪ সালের ৭ জুন রাতে চান্নিঘাট চা বাগান এলাকায় ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে আনামুল।

আদালতের রেকর্ড অনুযায়ী, রাত ৮টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। নাবালিকা আদিবাসী মেয়েটি তার বাড়িতে বসে পড়াশোনা করছিল। অভিযোগ, আনামুল ওই কিশোরীর বাবা অনুপস্থিত থাকার সুযোগ নিয়ে মেয়েটিকে অপহরণ করে।

রাতভর নিখোঁজ মেয়েটিকে তন্নতন্ন করে খোঁজা হয়। পরের দিন নির্যাতিতার মা উধারবন্দ থানায় এফআইআর দায়ের করেন।

মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, আনামুল মেয়েটিকে একটি অটোতে করে কয়েক কিলোমিটার দূরে অরুণাবন্দ চা বাগানের কাছে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে তিনি তাকে দু’বার ধর্ষণ করেন। অটোতে রাত কাটান এবং পরের দিন সকালে আনামুল কিশোরীকে তার বাড়ির কাছে ফেলে পালিয়ে যায়।

মেয়েটি পুলিশকে জানিয়েছে, তার সঙ্গে আনামুলের আগে থেকেই ‘সম্পর্ক’ ছিল। তবে সে জানত না যে আনামুল ইতিমধ্যেই বিবাহিত। যেহেতু এই মামলা পকসো আইনের আওতায় পড়ছে, তাই এখানে মেয়েটির সম্মতির কোনও মূল্য নেই — কারণ আইন অনুযায়ী নাবালিকার সম্মতি বৈধ নয়। অর্থাৎ, মেয়েটি রাজি থাকলেও সেটি অপরাধ হিসেবেই গণ্য হবে।

প্রাথমিক রিপোর্ট ও মেয়েটির অভিযোগে বলা হয়েছিল, প্রতিবেশী সেলিম উদ্দিন ও তার স্ত্রী মেয়েটিকে ফুঁসলিয়ে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যায় এবং আনামুলের হাতে তুলে দেয়। তবে তদন্তের পর যে চার্জশিটে (অভিযোগপত্র) শুধুমাত্র আনামুল হক লস্করকেই অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

কাছাড় আদালত উভয় অভিযোগেই আনামুল হক লস্করকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। ৩৬৩ আইপিসি (অপহরণ) ধারার অধীনে ৩ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫,০০০ টাকা জরিমানা। পকসো আইনের ৪ ধারার অধীনে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০,০০০ টাকা জরিমানা করেছে।

আদালত শর্ত দিয়েছে, উভয় সাজা একই সাথে চলবে। অর্থাৎ লস্কর ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করবেন। সংশ্লিষ্ট জরিমানা অনাদায়ে অতিরিক্ত এক মাস এবং ছয় মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে, যা শাস্তির তীব্রতা বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করে।

পকসো আইনের অধীনে ২০ বছরের সাজা আদালতের কঠোর নীতিকে প্রকাশ করে, যাতে শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধ রোধে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়।

তথ্যসূত্র: Hindu Voice