Tuesday, December 2, 2025
Latestরাজ্য​

Waqf Amendment Act : কেন্দ্রীয় পোর্টালে ওয়াকফ সম্পত্তির বিবরণ দেওয়া শুরু করলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে তীব্র বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। সংসদের যৌথ কমিটিতে ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে কাচের বোতল ভেঙে নিজের হাত রক্তাক্ত করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একাধিকবার ঘোষণা করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে এই সংশোধিত ওয়াকফ আইন কার্যকর হবে না।

কিন্তু বৃহস্পতিবার রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের তরফে সব জেলাশাসকদের কাছে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়েছে, ওয়াকফ সম্পত্তির সব বিবরণ কেন্দ্রীয় সরকারের ‘উমিদ’ পোর্টালে নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক। এই নির্দেশিকা প্রকাশের পর থেকেই রাজ্য সরকারের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে।

কেন এই নির্দেশ? আইনগত বাধ্যবাধকতার ব্যাখ্যা

ওয়াকফ বোর্ডের একাধিক কর্তা জানান, কেন্দ্রের নির্ধারিত সময়সীমা ৫ ডিসেম্বর। তার মধ্যে তথ্য আপলোড না করলে আইনগত জটিলতা তৈরি হতে পারে। সে কারণেই শেষ মুহূর্তে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।

সরকারের এক শীর্ষকর্তা বলেন, আগে ‘WAMSI’ পোর্টালে বাংলার প্রায় ৮০% ওয়াকফ সম্পত্তি নথিভুক্ত হয়ে গিয়েছিল। নতুন পোর্টাল ‘উমিদ’-এ তথ্য দেওয়া তাই খুব কঠিন নয়।

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে ৮,০৬৩টি ওয়াকফ এস্টেট এবং ৮২,৬০০টি ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে।

ওয়াকফ বোর্ডের এক শীর্ষকর্তার দাবি, সুপ্রিম কোর্টে আইন নিয়ে মামলা চললেও নথিভুক্তিকরণ স্থগিত করার কোনও নির্দেশ নেই। ফলে নির্দিষ্ট ধারাগুলি উপেক্ষা করলে তার প্রভাব হতে পারে ‘সুদূরপ্রসারী ও নেতিবাচক’—এমন আশঙ্কাই সরকারকে নির্দেশিকা দিতে বাধ্য করেছে।

এত কম সময়ে কাজ সম্ভব?

এসআইআর প্রকল্প নিয়ে যখন প্রশাসন ব্যস্ত, তখন এই নির্দেশিকা ‘গোদের উপর বিষফোড়া’ মনে করছেন অনেক আমলা।

মন্ত্রী ও জমিয়তে-উলেমা-ই-হিন্দের রাজ্য সভাপতি সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন, “এত দ্রুত কাজ সম্ভব নয়। মুখ্যমন্ত্রীকে বলব সময়সীমা বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রকে চিঠি লিখতে।” তিনি জানান, পোর্টালে তথ্য জমা দিতে ৪৬টি আলাদা তথ্য দিতে হয়—সম্পত্তির বয়স, চৌহদ্দি, মোতোয়াল্লি, বাজারমূল্য, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সহ বহু তথ্য যা দ্রুত সংগ্রহ করা কঠিন।

ফিরহাদ হাকিম ও নওশাদ সিদ্দিকি কি বলছেন?

কলকাতার মেয়র ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আমরা ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে, আজও তাই আছি। কিন্তু সম্পত্তি নথিভুক্ত করতে অসুবিধা নেই। এতে স্বচ্ছতা বাড়বে।”

অন্যদিকে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি কটাক্ষ করে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন আইন কার্যকর করবেন না। এখন তার সরকারই সেই আইন মানছে। সংখ্যালঘুদের বোঝার সময় এসেছে।”

বিজেপির অভিযোগ

বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল ওয়াকফের জমি ‘হাঙরদের’ হাতে তুলে দিচ্ছে।