‘কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তি সত্ত্বেও উদ্বাস্তু হিন্দুদের আটক করা হচ্ছে কেন?’, জনস্বার্থ মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টে
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক— আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সংখ্যালঘুদের গ্রেফতার করছে পুলিশ। তাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা থাকা সত্ত্বেও বহু হিন্দু, জৈন, খ্রিস্টান প্রভৃতি সংখ্যালঘু নাগরিককে বাংলাসহ বিভিন্ন রাজ্যের জেলে অবৈধভাবে আটকে রাখা হয়েছে।
আবেদনকারী গোপাল গোয়ালির দাবি, ২০২৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ—থেকে আসা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের (হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্শি ও খ্রিস্টান) বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। তাঁদের ভিসা বা পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হলেও বা প্রমাণপত্র না থাকলেও ‘ফরেনার্স অ্যাক্ট’ বা ‘পাসপোর্ট অ্যাক্ট’-এর আওতায় মামলা করা যাবে না।
তবুও পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশি হিন্দুদের আটক করে জেলে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এবার বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে আর্জি জানালেন আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তাঁর দাবি, “কেন্দ্রীয় সরকারের স্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও রাজ্য প্রশাসন অদ্ভুত যুক্তি দেখিয়ে বহু হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু শরণার্থীকে বন্দি করে রেখেছে। এটা সংবিধান ও মানবাধিকারের পরিপন্থী।”
এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের ডিজি কারেকশনাল হোম, রাজ্যের আইন দফতর, কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল বলে জানান তিওয়ারি। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হলেন তিনি।
হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এই মামলার শুনানির অনুমতি দিয়েছেন। আগামী শুক্রবার এই জনস্বার্থ মামলার শুনানি হওয়ার কথা।
আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারির বক্তব্য, “ভারত সরকার যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, তার মূল উদ্দেশ্য হল প্রতিবেশী দেশগুলিতে ধর্মীয় কারণে নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়া। অথচ প্রশাসনিক জটিলতা ও অস্পষ্টতার কারণে সেই মানুষগুলিই আজ জেলে দিন কাটাচ্ছেন।”


