Monday, March 17, 2025
Latestদেশ

অমৃতধারা প্রকল্পের আওতায় ১০টি থাকলে ১০ লাখ টাকা ঋণ দেবে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার 

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশে কৃষকদের গোপালনে উৎসাহ দিতে বড়সড় পদক্ষেপ নিল যোগী আদিত্যনাথের সরকার। রাজ্যের সদ্য ঘোষিত বাজেটে গবাদি পশুর সংরক্ষণ ও জৈব কৃষি প্রসারের লক্ষ্যে নতুন প্রকল্প ‘অমৃতধারা’ চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ২ থেকে ১০টি গরু পালনের জন্য কৃষকদের সহজ শর্তে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে।

১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের সুবিধা

এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের কৃষকরা ১০টি গরু পর্যন্ত পালন করলে ১০টি ব্যাংকের মাধ্যমে সহজ শর্তে ঋণ পাবেন। ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের জন্য কোনো গ্যারান্টারের প্রয়োজন হবে না, যা কৃষকদের জন্য একটি বড় সুবিধা। কৃষকদের গবাদি পশু পালন ও তার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহের পথ সুগম করতেই সরকারের এই পদক্ষেপ।

বেওয়ারিশ গরুর সংরক্ষণে ২০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ

উত্তরপ্রদেশের গ্রামাঞ্চলে বেওয়ারিশ গরুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল। এই সমস্যা সমাধানে সরকার ২,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। সরকারের দাবি, এই অর্থ দিয়ে রাজ্যের গোশালাগুলিকে শক্তিশালী করা হবে এবং বেওয়ারিশ গরু সংরক্ষণের মাধ্যমে তাদের কার্যকরভাবে কাজে লাগানো হবে।

জৈব কৃষিকে উৎসাহিত করাই মূল লক্ষ্য

যোগী সরকারের মূল লক্ষ্য রাসায়নিক সার ও কীটনাশকমুক্ত কৃষিকাজকে জনপ্রিয় করে তোলা। এজন্য গবাদি পশু পালনকে কৃষির সাথে যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গোবর ও গোমূত্রকে সার ও কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব কৃষির প্রচলন করাই এই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য। এর ফলে কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমবে এবং তাদের আয়ের নতুন পথ খুলে যাবে।

হিন্দুত্বের রাজনীতি নাকি কৃষকদের জন্য প্রকৃত সুবিধা?

যোগী আদিত্যনাথের শাসনকালে গরুর নিরাপত্তা ও সংরক্ষণে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তার সরকার গরুকে ‘মা’ হিসেবে গণ্য করে গোপালনের প্রসারে গুরুত্ব দিয়েছে। বিরোধীরা যদিও এই প্রকল্পকে হিন্দুত্বের রাজনীতির অংশ হিসেবে দেখছে, তবে সরকারের দাবি এটি শুধুমাত্র কৃষকদের জন্যই করা হয়েছে।

উত্তরপ্রদেশ কি হয়ে উঠবে জৈব কৃষির হাব?

সরকারের পরিকল্পনা যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে উত্তরপ্রদেশ আগামী দিনে জৈব কৃষির অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। কৃষকরা যদি এই সুবিধাগুলি গ্রহণ করেন, তাহলে একদিকে দুধ উৎপাদন বাড়বে, অন্যদিকে রাসায়নিক মুক্ত কৃষিকাজের প্রসার ঘটবে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত নজরদারি ও কার্যকর ব্যবস্থাপনা জরুরি, না হলে এই উদ্যোগও ফাইলবন্দি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে।

বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ‘অমৃতধারা প্রকল্প’ উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের জন্য কতটা কার্যকরী হবে, তা নির্ভর করবে এর বাস্তবায়নের ওপর। তবে সরকারের এই পদক্ষেপ কৃষকদের গবাদি পশু পালনে উৎসাহিত করবে, যা তাদের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার পথে এগিয়ে নিতে পারে।