Monday, November 17, 2025
Latestআন্তর্জাতিক

টাকার বিনিময়ে পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ আমেরিকার হাতে তুলে দিয়েছিল পাকিস্তান, বিস্ফোরক দাবি প্রাক্তন CI আধিকারিকের

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: অবশেষে আশঙ্কাই সত্যি হলো। কয়েক মাস আগে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময় পাকিস্তানের কিরানা হিলে ভারতীয় মিসাইল হামলার পর জল্পনা ছড়িয়েছিল। তখন দাবি করা হয়েছিল, পাকিস্তানের পরমাণু ঘাঁটি কিরানা হিলে ভারতীয় বাহিনীর হামলা করেছিল। যদিও ভারতীয় সেনা বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেনি। সেই সময় থেকেই পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রাগার নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল। এবার সেই জল্পনায় নতুন মাত্রা যোগ করলেন মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র প্রাক্তন কর্তা জন কিরিয়াকু (John Kiriakou)।

এএনআই-কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জন কিরিয়াকু দাবি করেছেন, পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রাগারের নিয়ন্ত্রণ আমেরিকার হাতে তুলে দিয়েছিল। কিরিয়াকুর কথায়, “২০০২ সালে যখন আমি সিআইএ-র সন্ত্রাস দমন অপারেশনসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিই, তখন আমাকে অনানুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছিল যে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রগুলির কার্যকর নিয়ন্ত্রণ মার্কিন প্রশাসনের হাতে।”


কিরিয়াকুর দাবি অনুযায়ী, সেই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে কয়েক মিলিয়ন ডলার সাহায্য দিয়েছিল—সামরিক সহায়তা এবং উন্নয়ন তহবিল হিসেবে। কিন্তু আসল উদ্দেশ্য ছিল ইসলামাবাদের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা। তাঁর কথায়, “আমরা মোশাররফের সঙ্গে সপ্তাহে একাধিকবার বৈঠক করতাম। আমেরিকা কার্যত তাকে কিনে ফেলেছিল, কারণ তিনি আমাদের প্রায় সব সিদ্ধান্তে সম্মতি দিতেন।”

প্রাক্তন সিআইএ কর্তার মতে, পারভেজ মোশাররফের ভয় ছিল পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র জঙ্গি সংগঠনগুলির হাতে চলে যেতে পারে। সেই আশঙ্কা থেকেই তিনি গোপনে আমেরিকাকে নিয়ন্ত্রণ দিতে রাজি হন। কিরিয়াকুর মতে, “মোশাররফ এক ধরনের ‘ডাবল গেম’ খেলেছিলেন—একদিকে আমেরিকার সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা দেখাচ্ছিলেন, অন্যদিকে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর অনুমতি দিচ্ছিলেন।”

তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সবসময় ভারতের দিকেই বেশি মনোযোগী ছিল। আল কায়েদা বা অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের তুলনায় তাদের বড় উদ্বেগ ছিল ভারতকে ঘিরে। তাই মোশাররফ বাধ্য হন সেনাবাহিনী ও ইসলামি চরমপন্থীদের খুশি রাখতে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দিতে।”

যদিও পাকিস্তান সরকার বা সেনাবাহিনীর তরফে এই দাবির বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে কিরিয়াকুর দাবি পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রে আমেরিকার দীর্ঘদিনের প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।