Tuesday, November 11, 2025
Latestআন্তর্জাতিক

পাকিস্তানে হিন্দু তরুণীকে অপহরণ, জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করে বয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে; আদালতের নির্দেশে বাড়ি ফিরলেন তরুণী

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন অব্যাহত পাকিস্তানে। এবার ফের জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করে বয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো। ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের সিন্ধপ্রদেশে। ৩ মাসের অমানবিক অভিজ্ঞতার পর অবশেষে বাড়ি ফিরেছেন ওই তরুণী।

অভিযোগ ওই তরুণীকে অপহরণের পর জোরপূর্বক ধর্মান্তকরণ করা হয়। এরপর বয়সে অনেক বড় এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সিন্ধ প্রদেশের উমেরকোট এলাকার একটি আদালতের নির্দেশে পরিবারের কাছে ফিরেছেন ওই তরুণী।

সমাজকর্মী শিব কাছি জানিয়েছেন, ‘তরুণীকে সিন্ধের মীরপুর খাস শহরের একটি এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়েছিল। এরপর জোর করে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয় এবং বিয়ের আয়োজন করা হয়। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে। আইনি লড়াইয়ের মধ্যেই আদালতের নির্দেশে কিছুদিন সরকারি এক হোমে থাকতে হয় তরুণীকে। অবশেষে দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত তরুণীর বক্তব্য গ্রহণ করে এবং তাঁকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।’

উমেরকোট আদালতের আইনজীবী চন্দর কোহলি বলেন, “সিন্ধ প্রদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু মেয়েদের জোর করে ধর্মান্তরিত করে বিয়ে দেওয়ার ঘটনা নতুন নয়। প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে এই প্রবণতা ভয়াবহ আকার নিচ্ছে।”

ঘটনার পর সমাজকর্মী মহল এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলি একযোগে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তাঁদের অভিযোগ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মেয়েদের অপহরণ ও জোরপূর্বক ধর্মান্তকরণের ঘটনাগুলি প্রশাসন প্রায়ই উপেক্ষা করে যায়, ফলে অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

এই প্রথম নয়—এর আগেও পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে এমন ঘটনা বহুবার ঘটেছে। গত মাসেই সিন্ধ প্রদেশের আরেকটি আদালতে হাজির হয়েছিল মাত্র ১৫ বছরের এক হিন্দু নাবালিকা, যার অভিযোগ—তাকেও অপহরণ করে ধর্ষণ, ধর্মান্তকরণ এবং জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে আদালতের নির্দেশে নাবালিকাটি একটি সরকারি হোমে আশ্রয় নিয়েছে এবং সেখান থেকেই নিয়মিত শুনানিতে অংশ নিচ্ছে।

মানবাধিকার সংস্থা ও সংখ্যালঘু সংগঠনগুলির মতে, পাকিস্তানের সংখ্যালঘু মেয়েদের নিরাপত্তা আজ মারাত্মকভাবে প্রশ্নের মুখে। ধর্মান্তকরণ ও জোরপূর্বক বিয়ের এই চক্র ভাঙতে হলে প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থার কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন—এমনটাই দাবি তাদের। PTI