‘কৃষকদের শস্যের গোড়া পোড়ানো থেকেই বায়ু দূষণ, কয়েকজনকে জেলে ভরুন’, কড়া নির্দেশ প্রধান বিচারপতির
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: প্রতি বছর অক্টোবর মাসে রাজধানী দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ভয়ংকর মাত্রায় বায়ু দূষণ বেড়ে যায়। এই সংকটের অন্যতম প্রধান কারণ শস্যের গোড়া পোড়ানো। প্রতিবছর এই সময়ে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশের কৃষকরা শস্যকাটা পরবর্তী সময়ে জমিতে অবশিষ্ট থাকা শস্যের গোড়া পুড়িয়ে দেন। এতে প্রচুর ধোঁয়া নির্গত হয়, পরিবেশে ক্ষতিকর কণা ও গ্যাসের মাত্রা অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পায়। ফলে রাজধানী দিল্লি এবং তার আশপাশের এলাকা এক ভয়ানক বায়ু দূষণের শিকার হয়।
এই নিয়ে বহুদিন ধরেই মামলা চলছে। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চে এই বিষয়ে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই স্পষ্ট বলেন, ‘প্রশাসনের দেওয়া নির্দেশিকা মানা না হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। বিশেষ করে কিছু কৃষককে জেলে পাঠিয়ে উদাহরণ স্থাপন করতে হবে। কারণ শুধুমাত্র সচেতনতা দিয়ে সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। কঠোর শাস্তি দিলেই শস্যের গোড়া পোড়ানো বন্ধ হবে।’
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, “আমরা এটিকে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা হিসেবে দেখতে পারবো না। কৃষকরা আমাদের অন্নদাতা। তবে তার মানে এই নয় যে আমরা পরিবেশকে অবহেলা করবো।”
প্রবীণ আইনজীবী অপারজিতা সিং আদালতে বলেন, ‘কৃষকদের যথেষ্ট ভর্তুকি এবং সরঞ্জাম দেওয়া হলেও সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ২০১৮ সাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট বহু নির্দেশিকা জারি করলেও প্রশাসনিকভাবে সমস্যা থেকে যায়।’
পাঞ্জাব সরকারের পক্ষে উপস্থিত আইনজীবী রাহুল মেহরা দাবি করেন, ‘গত কয়েক বছরে শস্যের গোড়া পোড়ানোর প্রবণতা কমেছে।’
প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই জোর দিয়ে বলেন, “আপনারা কেন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেবেন না? যদি কয়েকজনকে জেলে পাঠানো যায়, তবেই সঠিক বার্তা যাবে।”
সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টকে ৩ মাসের মধ্যে শূন্যপদে লোক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে। একইভাবে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ রাজ্য সরকারকেও এই পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। কারণ এই রাজ্যগুলি থেকেই সবচেয়ে বেশি শস্য গোড়া পোড়ানোর ঘটনা ঘটছে, যার কারণে মূলত দিল্লির বায়ু দূষণ ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছায়।