Friday, December 12, 2025
Latestআন্তর্জাতিক

‘এভাবে পাবেন নোবেল?’, মোদী-পুতিনের ছবি দেখিকে ট্রাম্পকে ধুয়ে দিলেন মার্কিন প্রতিনিধি

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ভারত–রাশিয়া কূটনৈতিক ঘনিষ্ঠতা নিয়ে তোলপাড় মার্কিন রাজনীতি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ছবি দেখিয়ে প্রকাশ্যেই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আক্রমণ করলেন মার্কিন কংগ্রেসউইম্যান সিডনি ক্যামলাগার-ডোভ। তাঁর অভিযোগ, ট্রাম্প প্রশাসনের ভুল নীতিই ভারতকে রাশিয়ার দিকে ঠেলে দিয়েছে, যা আমেরিকার কৌশলগত স্বার্থের পরিপন্থী।

‘নিজের নাক কেটে নিজের যাত্রাভঙ্গ’, ট্রাম্পকে কটাক্ষ

ক্যামলাগার-ডোভ দাবি করেন, ভারতের প্রতি ট্রাম্পের নীতি এতটাই বিপর্যয়কর ছিল যে তা ‘নিজের নাক কেটে নিজের যাত্রাভঙ্গ করার’ শামিল। তাঁর কথায়, ট্রাম্প ‘বন্ধু’ ভারতকে কার্যত প্রতিপক্ষ রাশিয়ার দিকে ঠেলে দিয়েছেন।

তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে তিনি বলেন, “এভাবে কৌশলগত অংশীদারকে প্রতিপক্ষের দিকে ঠেলে দিয়ে কেউ নোবেল শান্তি পুরস্কারের আশা করতে পারে না।”

মার্কিন প্রতিনিধির মতে, ইন্দো-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এখন আমেরিকার উচিত দ্রুত সহযোগিতার পথে ফেরা এবং দমনমূলক জোট-রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসা।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ২৭ ঘণ্টার ভারত সফরের তাৎপর্য

ভারত সফর সেরে গেলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর দিল্লি আগমনকে ঘিরে ছিল বিশেষ উষ্ণতা। প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজ বাসভবনে পুতিনকে স্বাগত জানান এবং পরদিন দুই নেতা যৌথ বিবৃতি দেন।

মোদী স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারত ও রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছে। পহেলগাঁও বা ক্রোকাস সিটি—সব হামলার উৎস একই।”

একই সঙ্গে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গেও ভারতীয় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি, “ভারত নিরপেক্ষ নয়, বরং শান্তির পক্ষে।”

‘গ্লোবাল সাউথ কাঠামোতে ভারত–রাশিয়া–চিন সমান গুরুত্বপূর্ণ’

পুতিনের ভারত সফর নিয়ে উৎসাহ প্রকাশ করেছে চিনও। বেজিংয়ের বক্তব্য— ভারত, রাশিয়া এবং চিন— তিন দেশই উদীয়মান অর্থনীতি এবং ‘গ্লোবাল সাউথ’-এর মূল স্তম্ভ। তিন দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি।

চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বলেন, “তিন দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সহায়ক। ভারত–চিন সম্পর্ক এখন অনেকটাই স্বাভাবিক।”

ভারত–রাশিয়া সম্পর্ক বরাবরই ঘনিষ্ঠ হলেও, পুতিনের সাম্প্রতিক সফর তার নতুন কূটনৈতিক গুরুত্বকে সামনে এনেছে। আর এ নিয়েই মার্কিন অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নতুন করে শুরু হয়েছে দোষারোপের ঝড়। একদিকে ক্যামলাগার-ডোভের বক্তব্য ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে, অন্যদিকে ভারত–রাশিয়া–চিনের ত্রিপাক্ষিক সমীকরণ আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।