‘Operation Torch’ in Varanasi: অনুপ্রবেশকারী ধরতে ‘অপারেশন টর্চ’ অভিযান উত্তরপ্রদেশে
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশে অবৈধ রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সনাক্ত করতে ‘অপারেশন টর্চ’ অভিযান চলছে। নাগরিকদের সতর্ক থাকার পাশাপাশি নথি যাচাইয়ের অনুরোধ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
তিনি স্পষ্ট বার্তা দেন, গৃহকর্মী হোক বা ব্যবসায়িক কাজে নিয়োগ, আগে পরিচয় যাচাই বাধ্যতামূলক। রাজ্যের নিরাপত্তা, সামাজিক সম্প্রীতি ও সুশৃঙ্খল আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখাই সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কবার্তা
এক্স পোস্টে যোগী আদিত্যনাথ লিখেছেন, “রাজ্যে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। নিরাপত্তা সবার দায়িত্ব। নাগরিকরা সতর্ক থাকুন এবং কাউকে নিয়োগের আগে পরিচয় যাচাই করে নিন। নিরাপত্তাই সমৃদ্ধির ভিত্তি। তাই সামাজিক ভারসাম্য রক্ষায় সকলের সহযোগিতা অপরিহার্য।”
বারাণসীতে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ অভিযান
এদিকে, বারাণসী পুলিশ কমিশনারেট শুরু করেছে এক সপ্তাহব্যাপী বিশেষ যাচাইকরণ অভিযান। বাংলাদেশি, রোহিঙ্গাসহ সকল অবৈধ অভিবাসীকে শনাক্ত করাই এই ড্রাইভের উদ্দেশ্য।
কাশী জোনের ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (ডিসিপি) গৌরব বনসওয়াল জানান, শনিবার থেকে শুরু হওয়া অভিযানটি মূলত ‘অপারেশন টর্চ’-এর একটি অংশ। বনসওয়াল বলেন, “বস্তি অঞ্চল এবং রাস্তার বিক্রেতাদের পরিচয়পত্র পরীক্ষা করা হচ্ছে। যে কেউ বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বসবাস করলে, তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বারাণসীতে ‘অপারেশন টর্চ’ অভিযানে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাস্তায় নেমেছেন। তারা রাতের অন্ধকারে অভিযান চালাচ্ছেন। ১০টি দল শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। পুলিশ প্রায় ৫০টি বস্তিতে তল্লাশি চালায় যেখানে বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে বসবাস করছে বলে অভিযোগ। সিগরা থানার শিবপুরওয়া হাটা এলাকায় একটি এলাকায় পুঙ্খানুপুঙ্খ জিজ্ঞাসাবাদ করে। বাসিন্দাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রায় ২৭টি পরিবারকে শনাক্ত করে পুলিশ। তাদের আধার কার্ড পরীক্ষা করে দেখা যায় যে তারা সকলেই পশ্চিমবঙ্গের বীরপুরের বাসিন্দা।
পুলিশের দাবি, সকলেই বাংলাভাষী এবং মূলত পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর, যখন বাংলায় কারফিউ জারি করা হয়, তখন তারা তাদের পরিবারের সাথে কাশীতে আসেন এবং এখানেই বসতি স্থাপন করেন। বেশ কয়েকটি স্থান পরিবর্তন করার পর, তারা এখন দীর্ঘদিন ধরে রাজাবাজার বসবাস করছেন। এই ২৭ জনের মধ্যে অনেক শিশু আবর্জনা সংগ্রহের কাজ করে এবং বাবা-মা গাড়ির মেকানিকের কাজ করে। মহিলারা বেশিরভাগই ঝাড়ু, মোছা এবং অন্যান্য কাজ করেন।
জেলাজুড়ে নিবিড় তল্লাশি
প্রতিটি থানার ওসি নিজস্ব বিশেষ দল গঠন করেছেন। কুড়িজপুর এলাকায় অতিরিক্ত ডিসিপি (গোমতী জোন) বৈভব বাঙ্গারের নেতৃত্বে পরিচালিত হয় বিশেষ অভিযান। হাটমাটি বসতি, অস্থায়ী ঘর, হকার ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের পরিচয়, পেশা ও নথি যাচাই করা হয়। প্রতিটি ব্যক্তির ছবি ও বিস্তারিত তথ্য নির্দিষ্ট ফর্মে নথিভুক্ত করা হচ্ছে।
গোমতী জোনের বারাগাঁও থানাসহ বিভিন্ন ইউনিটও উচ্চ সতর্কতায় অভিযান চালাচ্ছে। কমিশনারেটের আওতাধীন সব থানা এলাকায় পরিকল্পিতভাবে চলছে পরিচয় যাচাই।
জিরো টলারেন্স নীতি
উত্তরপ্রদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে রাজ্য প্রশাসন এখন জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। ‘অপারেশন টর্চ’-এর মাধ্যমে একদিকে যেমন অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত করা হচ্ছে, তেমনি সাধারণ নাগরিকদেরও নিরাপত্তা অক্ষুণ্ণ রাখতে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানানো হয়েছে।


