Sunday, December 14, 2025
Latestদেশ

Thiruvananthapuram: তিরুঅনন্তপুরমে বিজেপির জয়কে ‘অভূতপূর্ব’ বললেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: বছর ঘুরলেই কেরলে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই ২০২৫ সালের শেষলগ্নে এসে দেশের দক্ষিণভূমে রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিল বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ। শনিবার প্রকাশ্যে এসেছে পুরসভা নির্বাচনের ফলাফল। তার মধ্যেই আলাদা করে নজর কেড়েছে কেরলের রাজধানী তিরুঅনন্তপুরম কর্পোরেশনের ভোটের ফল।

৪৫ বছর ধরে বামেদের দখলে থাকা তিরুঅনন্তপুরম কর্পোরেশন এই প্রথমবার বড় ধাক্কা খেল। ১০১টি ওয়ার্ডের এই কর্পোরেশনে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ ৫০টি ওয়ার্ড জিতে ক্ষমতা দখল করেছে। অন্যদিকে ইউডিএফ পেয়েছে ১৯টি, এলডিএফ ২৯টি এবং অন্যান্যরা জিতেছে ২টি ওয়ার্ড। আগের নির্বাচনে এই পুরনিগমে ক্ষমতায় ছিল বামজোট এলডিএফ। এবারের ভোটে তাদের আসনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় কেরলের রাজনীতিতে এক নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত মিলছে।

এই জয়ের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে লেখেন, “ধন্যবাদ, তিরুঅনন্তপুরম! তিরুঅনন্তপুরম কর্পোরেশনে বিজেপি-এনডিএ যে ম্যান্ডেট পেয়েছে, তা কেরালার রাজনীতিতে এক যুগান্তকারী মুহূর্ত।”

উল্লেখ্য, তিরুঅনন্তপুরম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। তাঁর কেন্দ্রেই বামেদের পরাজয় এবং এনডিএর এই জয় রাজনৈতিকভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ভোটের ফল প্রকাশের পর শশী থারুর বলেন, “এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। জনগণের রায়কে সম্মান করতেই হবে, তা সে সামগ্রিকভাবে ইউডিএফের জন্য হোক বা আমার নির্বাচনী এলাকায় বিজেপির জন্য।”

একইসঙ্গে বিজেপির সাফল্যের প্রশংসা করে তিনি লেখেন, তিরুঅনন্তপুরমে বিজেপির ঐতিহাসিক জয় রাজধানীর রাজনৈতিক দৃশ্যপটে এক বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করছে। তিনি আরও জানান, ৪৫ বছরের এলডিএফ শাসনের বিরুদ্ধে তিনি পরিবর্তনের পক্ষে প্রচার চালিয়েছিলেন, তবে ভোটাররা শেষ পর্যন্ত অন্য একটি দলকে সেই পরিবর্তনের দায়িত্ব দিয়েছেন।

তিরুঅনন্তপুরমের পাশাপাশি বিজেপি ২০২০ সালের ভোটে জেতা পালাক্কড় পুরসভাও এ বার ধরে রাখতে পেরেছে। যদিও সামগ্রিকভাবে কেরলের স্থানীয় নির্বাচনে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউডিএফের ফলাফল তুলনামূলকভাবে উজ্জ্বল।

কেরলে এ বছর দু’দফায় মোট ১১৯৯টি পুরসভা ও ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে ভোট হয়েছে। প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ এগিয়ে রয়েছে প্রায় ৫০টি পুরসভায়, যেখানে বামজোট এগিয়ে ২৫টিতে। কোচি, ত্রিশূর ও কোল্লমের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুরনিগমগুলিতে কংগ্রেস জোট শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। তবে বহু এলাকায় ইউডিএফের সাফল্যের ব্যবধান কম হওয়ায় বামেদের জন্য এখনও লড়াই পুরোপুরি শেষ হয়নি।

এই ফলাফল নিয়ে শশী থারুর তাঁর পোস্টে ইউডিএফকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বিভিন্ন স্থানীয় সংস্থায় এই জয় বিধানসভা নির্বাচনের আগে একটি শক্তিশালী বার্তা। তাঁর মতে, কঠোর পরিশ্রম, স্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তা এবং ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে বিরোধী মনোভাবই ২০২০ সালের তুলনায় অনেক ভালো ফল এনে দিয়েছে।

সব মিলিয়ে, বিধানসভা ভোটের মুখে কেরলের স্থানীয় নির্বাচনের ফল রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে। একদিকে বামেদের শক্ত ঘাঁটিতে এনডিএর প্রবেশ, অন্যদিকে সামগ্রিকভাবে ইউডিএফের ভালো ফল এই দুই ধারা মিলেই আগামী দিনের কেরল রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণ করবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।