Assam: ‘অনুপ্রবেশকারীমুক্ত অসম’ অভিযানে ১৫ একর সরকারি জমি থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ‘অনুপ্রবেশকারীমুক্ত অসম’ অভিযানের অংশ হিসেবে বুধবার প্রায় ১৫ একর সরকারি জমি থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করল জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের দাবি, বহু বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী পরিবার বছরের পর বছর ধরে ওই এলাকায় ঘরবাড়ি, দোকান, এমনকি মসজিদ ও মাদ্রাসা পর্যন্ত নির্মাণ করেছিল।
সকাল থেকেই ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন
বুধবার সকাল সাতটা নাগাদ ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী নিয়ে অভিযানে নামে প্রশাসন। মাইকে ঘোষণা করা হয়, যাঁদের কাছে বৈধ নথি আছে তারা আগেভাগে জিনিসপত্র সরিয়ে নিন। তবে অধিকাংশ বাসিন্দাই জমির বৈধ মালিকানা সংক্রান্ত কোনো নথি দেখাতে পারেননি।
जब कोसों दूर कोई अतिक्रमणकारी पीला JCB देखता है तो जोर से कहता है, भाग जाओ असम सरकार आगयी।
In Assam, you can’t be a Dhurandhar, you have to follow the law and vacate illegally occupied lands- else we will help you out in the process.
~15 acres land freed in Bongaigaon 💪 pic.twitter.com/k6ELKaSTGG
— Himanta Biswa Sarma (@himantabiswa) December 9, 2025
তারপরই শুরু হয় উচ্ছেদ। বুলডোজারের ধাক্কায় টিনের চাল উড়ে যায়, ভেঙে পড়ে বাঁশের দেওয়াল। মিনিট পঞ্চাশেকের মধ্যেই ১০-১২ বছর ধরে গড়ে ওঠা পুরো বসতিটাই মাটির সমান হয়ে যায়।
উচ্ছেদে নেতৃত্বে জেলাশাসক ও এসপি
অভিযানে নেতৃত্ব দেন বঙাইগাঁওয়ের জেলা শাসক নবনীত মহন্ত এবং পুলিশ সুপার মৃণাল দত্ত। তাঁদের সঙ্গে ছিল চার কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী। প্রশাসনিক হিসাব অনুযায়ী মোট ১৪.৭ একর জমি মুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে রেলের জমিও রয়েছে। উচ্ছেদ হওয়া পরিবার সংখ্যা প্রায় ১৮০।
উচ্ছেদের পর পরই সেই জমিতে লাগানো হয় সাইনবোর্ড, “এই জমি অসম সরকারের সম্পত্তি। অবৈধ দখল করা আইনত দণ্ডনীয়।” প্রশাসনের তরফে আরও জানানো হয়েছে, আগামী সপ্তাহে আরও দুই জায়গায় অনুরূপ অভিযান চলবে।
মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা
বিকালে এক্সে প্রতিক্রিয়া দেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি লেখেন, “অসম কারও বাপের সম্পত্তি নয়। সরকারি জমি দখল করে বসে থাকলে ছাড় নেই। যে-ই হোন, যে ধর্মেরই হোন, অবৈধ দখলদারকে ছাড়া হবে না। আজ বঙাইগাঁও থেকে ১৫ একর জমি উদ্ধার করেছি। এটা শুধু শুরু।”
তিনি আরও যোগ করেন, “যাঁরা ভাবছেন ভোটব্যাঙ্কের ভয়ে আমরা পিছোইব, তারা ভুল করছেন। অসমের মাটি, অসমের আইন, এখানে জঙ্গলরাজ চলবে না।”
উচ্ছেদ হওয়া বাসিন্দাদের ক্ষোভ
অন্যদিকে গৃহহারা মানুষদের ক্ষোভও তীব্র। তাদের দাবি, বহু পরিবার বছরের পর বছর ধরে এখানে বসবাস করছেন। অনেকে ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড দেখালেও জমির কাগজ অর্থাৎ পাট্টা দেখাতে পারেননি।
এক মহিলা কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “আমরা কোথায় যাব? ছেলেমেয়েরা স্কুলে যায়। সব শেষ হয়ে গেল।” এক বৃদ্ধ প্রশ্ন তোলেন, “আমরা তো ১৯৯১-এর আগেই এসেছি। তাহলে অনুপ্রবেশকারী কেন?”
প্রশাসনের কড়া অবস্থান
জেলাশাসক নবনীত মহন্তের জবাব, “সরকারি জমি দখল করে রাখা যাবে না। কারও বৈধ দাবি থাকলে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন।”
রাজনৈতিক বিতর্ক চরমে
এই উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলেও তোলপাড়। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, “এটা অসমের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।” অন্যদিকে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, প্রশাসন কি যথাযথ পুনর্বাসনের কোনও ব্যবস্থা করেছে?


