Bangladesh Debt Trap: ঋণের ফাঁদে বাংলাদেশ, স্বীকার করলো অন্তর্বর্তী সরকার, প্রতিশ্রুতি দিয়েও ব্যর্থ ইউনূস
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ঋণের চাপ বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছেছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার করলো বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (NBR) চেয়ারম্যান মহম্মদ আবদুর রহমান খান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, ‘বাংলাদেশ এখন ঋণের ফাঁদে পড়েছে। এই বাস্তবতা স্বীকার করাই সংকট মোকাবিলার প্রথম ধাপ।’
কর-জিডিপি অনুপাত তলানিতে
আলোচনা সভায় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, দেশের কর-জিডিপি অনুপাত ভয়াবহভাবে কমেছে। কয়েক বছর আগেও যেখানে অনুপাত ১০ শতাংশের বেশি ছিল, এখন তা নেমে এসেছে ৭ শতাংশের ঘরে। কর আদায়ে ধারাবাহিক ঘাটতির কারণেই রাষ্ট্রের আর্থিক ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, সহ বিভিন্ন দপ্তরের সচিব ও উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা।
বৈদেশিক ঋণে ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি
বিশ্ব ব্যাঙ্কের সর্বশেষ রিপোর্ট আরও উদ্বেগ বাড়িয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, গত বছরের শেষে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১০,৪৪৮ কোটি ডলারে।
পাঁচ বছর আগে, ২০২০ সালে এই অঙ্ক ছিল ৭,৩৫৫ কোটি ডলার। অর্থাৎ, মাত্র পাঁচ বছরে ঋণ বেড়েছে ৪২ শতাংশ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ বৃদ্ধির হার একটি মধ্যম আয়ের দেশের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
ইউনুস সরকার কেন পারছে না? উঠছে প্রশ্ন
সংকট আরও বেড়েছে কারণ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দেশের অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করানোর। কিন্তু,
কর আদায়ে স্থবিরতা,
অপ্রত্যাশিত বৈদেশিক ঋণ বৃদ্ধি,
রাজস্ব ঘাটতির চাপ,
ডলার সঙ্কট – সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অর্থনৈতিক মহলের প্রশ্ন, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সম্মানজনক অবস্থান থাকা সত্ত্বেও, অধ্যাপক ইউনুস কেন এই আর্থিক বিপর্যয় সামাল দিতে পারছেন না? বিশ্লেষকদের মতে, সরকারের কাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, প্রশাসনিক অদক্ষতা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা ইউনুসের প্রচেষ্টাকে কার্যত বাধাগ্রস্ত করছে।
অর্থনৈতিক সূচকগুলোতে রেড অ্যালার্ট
বাংলাদেশের প্রধান অর্থনৈতিক সূচকগুলোতে রেড অ্যালার্ট জ্বলছে। সরকারের সর্বোচ্চ মহল যখন প্রকাশ্যে ঋণের ফাঁদে পড়ার কথা স্বীকার করছে, তখন স্পষ্ট যে সামনে পথ আরও কঠিন। দেশের ভিতরে এবং বাইরে—দু’জায়গাতেই এখন বড় প্রশ্ন একটাই: এই পরিস্থিতিতে কি বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ খুঁজে পাবে?


