‘ভারত সনাতন ধর্মের অপমান সইবে না’, কোর্টেই প্রধান বিচারপতির দিকে জুতো ছোড়ার চেষ্টা আইনজীবীর
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ভিতরে এক নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী রইল দেশ। সোমবার আদালত কক্ষে ভারতের প্রধান বিচারপতি (CJI) বিআর গাভাই–এর দিকে জুতো ছোড়ার চেষ্টা করলেন এক আইনজীবী। উপস্থিত নিরাপত্তারক্ষীদের তৎপরতায় মুহূর্তেই তাঁকে আটক করা হয়।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর সূত্রে জানা গেছে, শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে আইনজীবীদের বক্তব্য শোনা হচ্ছিল। সেই সময় হঠাৎই এক আইনজীবী ডায়াসের দিকে এগিয়ে এসে পা থেকে জুতো খুলে প্রধান বিচারপতিকে লক্ষ্য করে ছোড়ার চেষ্টা করেন। যদিও তিনি সফল হননি— কারণ নিরাপত্তা কর্মীরা দ্রুত হস্তক্ষেপ করে তাঁকে আটকে দেন এবং আদালত কক্ষ থেকে বাইরে নিয়ে যান।
বাইরে বের করার সময় ওই আইনজীবীকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, “সনাতন ধর্মের অপমান সহ্য করব না”। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তের নাম রাকেশ কিশোর (৭১), দিল্লির ময়ূর বিহার এলাকার বাসিন্দা এবং সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন (SCBA)-এর সদস্য।
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, রাকেশ কিশোর সম্প্রতি প্রধান বিচারপতির একটি মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ছিলেন। বিষয়টি শুরু হয়েছিল মধ্যপ্রদেশের খাজুরাহো মন্দিরকে কেন্দ্র করে। ইউনেস্কো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ওই মন্দিরে বিষ্ণুর সাত ফুট উচ্চ মূর্তি পুনঃস্থাপনের জন্য আবেদন করেছিলেন রাকেশ দালাল নামের এক ব্যক্তি। তবে প্রধান বিচারপতি গাভাই সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে মন্তব্য করেছিলেন, “আপনি যদি ভগবান বিষ্ণুর একনিষ্ঠ ভক্ত হন, তবে এখনই প্রার্থনা করুন। এটি একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান, এখানে প্রতিস্থাপনের আগে ASI-এর অনুমতি দরকার।”
এই মন্তব্যের পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ ছড়ায়। বহু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ও ব্যক্তি প্রধান বিচারপতির মন্তব্যকে ‘সনাতন ধর্মের অবমাননা’ বলে আখ্যা দেন। যদিও প্রধান বিচারপতি পরে স্পষ্ট করে জানান, তিনি কোনও ধর্মকে অসম্মান করেননি; বরং দেশের সমস্ত ধর্মের প্রতিই তাঁর সমান শ্রদ্ধা রয়েছে।
ঘটনায় আদালতকক্ষে উপস্থিত আইনজীবীরা প্রথমে হতবাক হয়ে যান। তবে প্রধান বিচারপতি গাভাই শান্ত থাকেন। তিনি উপস্থিত আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, “এসব ঘটনায় বিচলিত বা বিভ্রান্ত হবেন না। এসব আমাকে প্রভাবিত করে না।”
এই ঘটনার পর আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।