Tuesday, November 11, 2025
Latestদেশ

দুর্গাপুজোয় অশান্তি পাকালেই ‘শুট অ্যাট সাইট’, জানালেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: অসমের ধুবড়ীতে সাম্প্রদায়িক হিংসা থেমে গেলেও এলাকায় এখনও অশান্তির আবহ পুরোপুরি কাটেনি। সেই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের জুন মাসে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ধুবড়ীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ‘দেখামাত্র গুলি’ (Shoot-at-sight) নির্দেশ জারি করেছিলেন। আপাতত শান্ত পরিস্থিতি বজায় থাকলেও, আসন্ন দুর্গাপুজো ঘিরে নিরাপত্তার স্বার্থে সেই নির্দেশের মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

কড়া অবস্থানে অসম সরকার

মঙ্গলবার কোকরাঝাড়ের এক অনুষ্ঠানে ধুবড়ীর প্রসঙ্গ তোলেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি জানান, নির্দেশ প্রত্যাহার করা হয়নি, বরং দুর্গাপুজো পর্যন্ত তা বহাল থাকবে। তাঁর বক্তব্য, ধুবড়ীতে শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করা হলে সরকার কঠোরতম পদক্ষেপ করবে। “ধুবড়ীতে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করলে কাউকে রেয়াত করা হবে না। যে কেউ কঠোর পরিণতির মুখোমুখি হবেন,” সতর্কবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর।

কেন বাড়ানো হলো নির্দেশের মেয়াদ

হিমন্ত বিশ্বশর্মা স্পষ্ট জানান, ধুবড়ীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সংখ্যালঘু। তাই দুর্গাপুজো ঘিরে তাদের নিরাপত্তাই সরকারের কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘‘ধুবড়ীতে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে শ্যুট অ্যাট সাইট অর্ডার জারি হয়েছিল। দুর্গাপুজোর সময়ে অশান্তি হতে পারে বলে নির্দেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।’’

অতীত পরিস্থিতি

গত জুন মাসে বকর ইদের পর ধুবড়ীর বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা দেখা দেয়। দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ‘দেখামাত্র গুলি’ নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। তার পর থেকেই ব্যাপক পুলিশি অভিযান শুরু হয়। ইতিমধ্যেই ১৫০-রও বেশি অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধুবড়ীতে পরপর দু’বার গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং।

বর্তমান আবহ

এখন ধুবড়ী শান্ত। সাম্প্রতিক সময়ে বড় কোনও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর মতে, আইনশৃঙ্খলার স্থিতি বজায় রাখতে এবং সম্ভাব্য অশান্তি ঠেকাতেই কঠোর অবস্থান থেকে সরে আসছে না সরকার। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘যে কেউ ধুবড়ীতে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করলে তার চরম পরিণতি হবে। পুজোয় শান্তি বজায় রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।’’

ধুবড়ীতে দুর্গাপুজো ঘিরে তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থা সর্বোচ্চ কড়াকড়ির পর্যায়ে নিয়ে গেল অসম সরকার। শান্তি বজায় রাখতে এবারও প্রশাসন ভরসা রাখছে ‘দেখামাত্র গুলি’-র কঠোর নির্দেশের উপর।