Sunday, November 23, 2025
Latestদেশ

INDI Alliance : বিহারে ভরাডুবির পর ক্রমশ চওড়া হচ্ছে ‘ইন্ডি’ জোটের ফাটল

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: বিহার বিধানসভা নির্বাচনে বিরাট বড় জয় পেয়েছে NDA জোট। নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকেই অস্থিরতা বাড়ছে বিরোধী শিবিরে (INDI Alliance)। বিজেপি বিরোধী ২৬টি দলকে নিয়ে গঠিত ‘ইন্ডি’ জোটের অভ্যন্তরীণ মতভেদ প্রকাশ্যে। কার্যত জোটের ভবিষ্যৎ নিয়েই সংশয়ে পড়েছে একাধিক শরিক দল।

বিজেপি-জেডিইউর উত্থান, কংগ্রেসের ব্যর্থতা

২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় বিজেপি একাই ১০১টি আসনে প্রার্থী দিয়ে পেয়েছে ৮৯টি আসন। জেডিইউ-ও সমসংখ্যক আসনে লড়ে পেয়েছে ৮৫টি আসন। বিপরীতে কংগ্রেসের ঝুলিতে গেছে মাত্র ৩৫টি আসন। এই ফলের পরেই দলের নেতৃত্ব ও নির্বাচনী কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে তৃণমূল, শিবসেনা-ইউবিটি, সমাজবাদী পার্টির মতো শরিকরা।

ভোটের আগেই শুরু হয়েছিল ফাটল

বিহারের আসন বিলি নিয়ে মতবিরোধের জেরে ভোটের আগেই ‘ইন্ডি’ জোট থেকে সরে দাঁড়ায় ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)। তাদের অভিযোগ ছিল— আলোচনায় উপেক্ষা, আগের বৈঠকের প্রতিশ্রুতি পালন না করা, আঞ্চলিক দলগুলিকে ছোট অংশীদার হিসেবে দেখা। 

জেএমএম নেতৃত্বের মতে, এই ঘটনাই বড় একটি কাঠামোগত সমস্যার প্রতিফলন।

তৃণমূল ও শিবসেনা সরাসরি আক্রমণ করেছে। ফল প্রকাশের পরে কংগ্রেসকেই সরাসরি দোষারোপ করছে তৃণমূল। দলটির দাবি, কংগ্রেস নেতৃত্বের ভুল সিদ্ধান্ত জোটকে দুর্বল করেছে।

শিবসেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী) ফলকে “বিরোধী শিবিরের সতর্কবার্তা” হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে। তাদের মতে—

যৌথ কৌশল ব্যর্থ, বড় দলগুলির একতরফা সিদ্ধান্তে সমন্বয় নষ্ট, আলোচনার অভাব জোটকে অচল করছে।

এসপি’র সতর্কবার্তা

সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব নির্বাচনী প্রক্রিয়াগত অনিয়মের অভিযোগ তুলে জোটের কাঠামো পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন। তাঁর মতে, ভবিষ্যতের লড়াই যাতে প্রভাবিত না হয়, সে জন্য জরুরি ‘বিকেন্দ্রীকৃত নেতৃত্ব মডেল’।

এসপি-র ইঙ্গিত, আঞ্চলিক দলগুলি জাতীয় কৌশলে আরও গুরুত্ব চাইছে।

আলাদা লড়াইয়ে আপ-এর যুক্তি

আম আদমি পার্টি ‘ইন্ডি’ জোটে থাকলেও বিহার নির্বাচনে একক লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের বক্তব্য— রাজ্যস্তরের বিস্তারকে কোনও ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। ঢিলেঢালা জাতীয় প্ল্যাটফর্মে দলীয় স্বশাসনের জায়গা কম।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি জোটের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার আরও একটি উদাহরণ।

কংগ্রেসকেই কাঠগড়ায়

হিন্দিভাষী বড় রাজ্যে কংগ্রেসের দুর্বল পারফরম্যান্সে তাদের দরকষাকষির ক্ষমতা কমছে বলে মানছেন দলের ভেতরের কিছু নেতা। একাধিক শরিক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে— সংগঠন কাঠামো, প্রার্থী বাছাই, সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বচ্ছতা।

—এই তিন ক্ষেত্রেই বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে কংগ্রেসকে।

জোটের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ‘ইন্ডি’ জোট এখন সবচেয়ে বড় পরীক্ষার সামনে দাঁড়িয়ে। জোট টিকিয়ে রাখতে হলে প্রয়োজন— দ্রুত যোগাযোগ, আস্থা পুনর্গঠন, আসনবিন্যাসে স্পষ্ট নীতি, আঞ্চলিক দলগুলির শক্তিকে মান্যতা।

যদি এসব না করা হয়, তবে আরও দল জোট ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারে বলেই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।