Monday, November 24, 2025
Latestদেশ

India-Israel FTA : ইসরায়েলের সঙ্গে ‘মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি’ করতে আলোচনায় ভারত

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ভারত ও ইজরায়েলের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন দিগন্ত খুলতে চলেছে। মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা করছে ভারত-ইসরায়েল। অত্যাধুনিক অস্ত্র সহযোগিতার গণ্ডি পেরিয়ে এবার দুই দেশ বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও গভীর করার পথে হাঁটছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছে নয়াদিল্লি ও তেল আভিভ। ফলে দুই দেশের কৌশলগত ঘনিষ্ঠতা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার ইঙ্গিত মিলছে।

দুই ধাপে বাস্তবায়নের ভাবনা

কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানিয়েছেন, ভারত-ইজরায়েল মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি দুই ধাপে বাস্তবায়নের বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। দীর্ঘ আলোচনার পরেও এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। তবে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে ধাপে ধাপে এফটিএ বাস্তবায়নের সম্ভাবনাই বেশি বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ইঙ্গিত।

গয়ালের মতে, ভারতের লক্ষ্য—ব্যবসায়ীদের জন্য একটি সুযোগসুবিধাসম্পন্ন বাণিজ্য পরিবেশ তৈরি করা। বিশেষ করে কৃষি-প্রযুক্তি, ওষুধ, ফিনটেক, মহাকাশ, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং প্রতিরক্ষার মতো খাতে যৌথ উদ্যোগের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।

টিওআর সই, সামনে আলোচনার নতুন পর্ব

গত ২০ নভেম্বর ভারতের তরফে পীযূষ গয়াল এবং ইজরায়েলের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যমন্ত্রী নীর বারাকাত ‘মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি’র শর্তাবলি (Terms of Reference–ToR)–তে সই করেন। এর মাধ্যমে এফটিএ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক আলোচনার পথ খুলে যায়। এর আগে দুই দেশের মধ্যে আট দফা আলোচনা হলেও চূড়ান্ত অগ্রগতি হয়নি। এবার টিওআর সইয়ের পর আলোচনা আরও গতিশীল হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

১০-ডি’: সম্পর্কের নতুন ভিত্তি

তেল আভিভের ব্যবসায়িক সম্মেলনে পীযূষ গয়াল ভারত–ইজরায়েল সম্পর্কের ভিত্তি বর্ণনা করতে ‘১০-ডি’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করেন। তাঁর মতে, এই দশটি উপাদান দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করেছে।

উপাদানগুলি হল—

গণতন্ত্র

সিদ্ধান্তমূলক নেতৃত্ব

১৪০ কোটি মানুষের চাহিদা

জনসংখ্যাতাত্ত্বিক লভ্যাংশ

বৈচিত্র্য

ডিকার্বোনাইজেশন

ডিজিটাল অর্থনীতি

সংকল্প

পরিকাঠামোগত উন্নয়ন

নির্ভরযোগ্যতা

গয়ালের দাবি, এই উপাদানগুলিই ভারতকে বৈশ্বিক বাণিজ্যে আরও আকর্ষণীয় অবস্থানে এনে দিয়েছে।

কেন ইজরায়েলকে গুরুত্ব দিচ্ছে ভারত?

নয়াদিল্লির কৌশলগত হিসেব বলছে, পশ্চিম এশিয়ার অন্যতম প্রযুক্তি-অগ্রগামী দেশ ইজরায়েল ভারতের রফতানি বাজার বৈচিত্র্য আনতে সাহায্য করতে পারে। রফতানি ঘাটতি কমানো, কৃষি এবং প্রযুক্তি বিনিময় বৃদ্ধি, প্রতিরক্ষা–সহ বহু ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করাই মূল লক্ষ্য।

এফটিএ হলে দুই দেশের মধ্যে শুল্ক বাধা কমবে, বাজার খুলবে এবং পণ্য ও প্রযুক্তির চলাচল আরও সহজ হবে। বিশেষ করে ভারতীয় কৃষিপণ্য, ওষুধ, যন্ত্রাংশ এবং প্রযুক্তি সংস্থার জন্য ইজরায়েল হতে পারে বড় বাজার।