Nobel Peace Prize 2025 Maria Corina Machado : ট্রাম্প নন, নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলেন ভেনেজুয়েলার মারিয়া কোরিনা মাচাদো
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার রাজনীতিক মারিয়া কোরিনা মাচাদো। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য তাঁর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে এ বছরের শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করেছে নরওয়ের নোবেল কমিটি।
মাচাদো সাম্প্রতিক সময়ে লাতিন আমেরিকার সাহসিকতার এক অনন্য প্রতীক হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। বছরের পর বছর ধরে স্বৈরাচার ও দমননীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে তিনি ভেনেজুয়েলায় মুক্ত, স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।
নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান ইয়রগেন ওয়াটনে ফ্রিডনেস বলেন, “মাচাদো ২০ বছরেরও বেশি আগে মুক্ত ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন—অর্থাৎ বন্দুকের বদলে ব্যালট বেছে নিয়েছিলেন। এটাই গণতন্ত্রের মূল চেতনা।”
তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্র মানে ভিন্নমতের মধ্যেও জনগণের শাসনের নীতিকে রক্ষা করার ইচ্ছা। আজ যখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গণতন্ত্র হুমকির মুখে, তখন এই যৌথ ভিত্তিকে টিকিয়ে রাখা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
ভেনেজুয়েলার পরিস্থিতি নিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, সেখানে গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করা অত্যন্ত বিপজ্জনক। তবু মাচাদো নির্ভীকভাবে জনগণের অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য লড়ে যাচ্ছেন।
ট্রাম্পকে ঘিরে গুঞ্জন
এবার নোবেল শান্তি পুরস্কারের দৌড়ে মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামও শোনা যাচ্ছিল। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাঁকে মনোনয়নও দিয়েছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পকে আরও কিছুদিন অথবা কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হবে।
অন্যান্য বিভাগে নোবেল বিজয়ীরা
সাহিত্য: এই বছর সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন হাঙ্গেরীয় লেখক লাসলো ক্রাসনাহরকাই। তাঁর সাহিত্যকর্ম মানব অস্তিত্ব, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক বিভাজনকে গভীর দার্শনিক দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করেছে বলে উল্লেখ করেছে সুইডিশ একাডেমি।
চিকিৎসাবিদ্যা: শারীরবিদ্যা বা চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছেন জাপানের শিমন সাকাগুচি, মার্কিন গবেষক মেরি ব্রানকাও এবং ফ্রেড রামসডেল। তাঁদের গবেষণা অটোইমিউন রোগ ও ক্যান্সারের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
রসায়ন: রসায়নে নোবেল পেয়েছেন সাসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন ও ওমর ইয়াগি। তাঁরা মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক (MOF) তৈরির গবেষণায় অবদান রেখেছেন, যা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় কার্বন ডাই-অক্সাইড সংরক্ষণ ও প্লাস্টিক দূষণ হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
পদার্থবিজ্ঞান: পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জন ক্লার্ক, মিশেল এইচ. ডেভোরে ও জন এম. মার্টিনিস। তাঁরা বৈদ্যুতিক সার্কিটে বৃহৎ মাত্রার কোয়ান্টাম টানেলিং ও শক্তির পরিমিত বিভাজন (quantum quantization) বিষয়ক গবেষণার জন্য এ সম্মান পান।
নোবেল পুরস্কারের প্রথা ও অর্থমূল্য
১৯০১ সাল থেকে প্রতি বছর নোবেল কমিটি গোপনে একাধিক পর্যায়ের বৈঠকের মাধ্যমে বিজয়ীদের নাম নির্ধারণ করে। কারা এই আলোচনায় অংশ নেন, তা প্রকাশ করা হয় না; এমনকি ৫০ বছর পর্যন্ত মনোনয়ন সংক্রান্ত তথ্যও গোপন রাখা হয়।
নোবেল পুরস্কারের প্রতিটি বিভাগে বিজয়ীরা পান একটি মেডেল, একটি সনদ (ডিপ্লোমা), এবং ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা (প্রায় ১১ লাখ ৫৬ হাজার মার্কিন ডলার) অর্থমূল্যের পুরস্কার। যদি কোনো দল একসঙ্গে পুরস্কার পান, তবে এই অর্থ তাঁরা ভাগ করে নেন।