SSC-কে সব OMR প্রকাশের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মে ফের কঠোর অবস্থান নিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। ২০২৫ সালের নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সমস্ত ওএমআর শিট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যেই সেগুলি এসএসসিকে (SSC) আপলোড করতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
OMR প্রকাশ না হওয়ায় ক্ষোভ বিচারপতির
বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি সিনহা এসএসসির আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, “ওএমআর আপলোড করেননি কেন? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নিয়োগ হচ্ছে। প্রথম দিন থেকেই স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করা উচিত। নাহলে পরে আবার অনিয়মের অভিযোগ উঠবে।”
এদিনই তিনি জানান, যখন প্রক্রিয়া সর্বোচ্চ আদালতের নজরদারিতে চলছে, তখন কোনও ধরনের অস্পষ্টতা বরদাস্ত করা হবে না।
২০১৬ সালের প্যানেল–বাতিল নিয়োগপ্রাপ্তদের তালিকা তলব
২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগ প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও যারা নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন, সেই সমস্ত শিক্ষকের তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছেন বিচারপতি সিনহা। এই তালিকাও ১০ ডিসেম্বরের মধ্যেই দাখিল করতে হবে এসএসসিকে।
বিচারপতির মন্তব্য, এই প্রার্থী–শিক্ষকদের অনেকে বর্তমান নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও অংশ নিয়েছেন। তাই মামলার পরবর্তী সিদ্ধান্তে তাঁদের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে।
‘পরীক্ষার কী হবে কেউ জানে না’ — কটাক্ষ বিচারপতির
শুনানি চলাকালীন এক আইনজীবী অন্য একটি মামলার দ্রুত শুনানির আবেদন করেন। তিনি জানান, ১৮ নভেম্বর থেকেই একাদশ-দ্বাদশের নথি যাচাই শুরু হবে। বিচারপতি সিনহা বলেন, “পরীক্ষার কী হবে কেউ জানে না, আর আপনি নথি যাচাই নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন।”
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ: অযোগ্য কাউকে নিয়োগ নয়
গতকাল সুপ্রিম কোর্ট জানায়, শিক্ষক নিয়োগে এক জন ‘অযোগ্য’ প্রার্থীকেও নিয়োগ নয়। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন অযোগ্যদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য।
সঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়, এসএসসিকে অযোগ্য প্রার্থীদের নতুন পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
কমিশন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার বিকালেই তালিকা প্রকাশের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ হবে?
সুপ্রিম কোর্ট আগেই জানিয়েছিল, নতুন নিয়োগ–প্রক্রিয়া ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে। কিন্তু হাইকোর্টের নতুন নির্দেশ এবং একাধিক মামলা বিচারাধীন থাকায় প্রশ্ন উঠছে—এই সময়সীমা মানতে পারবে কি এসএসসি?
বর্তমানে ওএমআর প্রকাশ, অযোগ্যদের তালিকা, পুরনো প্যানেল বাতিল—সব মিলিয়ে এসএসসির ওপর চাপ বাড়ছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী দ্রুত পদক্ষেপ না করলে প্রক্রিয়া আরও ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। আদালত শিক্ষক নিয়োগের প্রতিটি স্তরেই স্বচ্ছতাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।


