Pak Defence Minister : ঘরছাড়া ২০ লাখ মানুষ, অথচ বন্যাকে ‘আল্লাহর আশীর্বাদ’ বলছেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী; দিলেন বন্যার জল সংরক্ষণের পরামর্শ
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: পাকিস্তান জুড়ে ভয়াবহ বন্যায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুনের শেষ দিক থেকে শুরু হওয়া দুর্যোগে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৮৫৪ জনের, আহত হয়েছেন প্রায় ১,১০০ জন। ঘরছাড়া হয়েছেন ২০ লক্ষের বেশি মানুষ। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের দাবি, গত ৪০ বছরের মধ্যে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। হাজার হাজার একর কৃষিজমি জলের তলায়, গ্রামের পর গ্রাম সম্পূর্ণ ভেসে গিয়েছে। বিশেষত খাইবার পাখতুনখোয়ায় মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি—শুধু এই প্রদেশেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪০৬ জন।
মন্ত্রীর মন্তব্যে বিতর্ক
এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতেই বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “দেশের মানুষের উচিত এই বন্যাকে আল্লাহর আশীর্বাদ হিসেবে বিবেচনা করা। গোটা বিশ্বে জলের জন্য হাহাকার চলছে, তার মধ্যে পাকিস্তানের এই বন্যা অত্যন্ত শুভ।”
এখানেই থেমে থাকেননি আসিফ। তিনি আরও বলেন, “জনগণের উচিত বন্যার জল বালতি বা পাত্রে ভরে বাড়ি নিয়ে যাওয়া, কারণ এর মাধ্যমে পাকিস্তানের জলসংকটের স্থায়ী সমাধান হতে পারে।”
সরকারের গাফিলতিতে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন। এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রীর এহেন মন্তব্যে ক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা স্বীকার করলেও আসিফ দায় চাপিয়েছেন জনগণের উপর। তার মতে, নদীর তীর দখল করে বসতি গড়ে তোলার কারণেই নদীর গতিপথ বদলে বন্যার প্রকোপ বাড়ছে।
ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ
একই সময়ে পাকিস্তানের পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল অভিযোগ করেছেন, ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জলকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। তার দাবি, ভারত হঠাৎ বিপুল জল ছাড়ায় বন্যার ভয়াবহতা বেড়েছে। যদিও ভারতীয় সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানকে আগেভাগেই জল ছাড়ার বিষয়ে জানানো হয়েছিল।
ক্ষোভে উত্তাল জনগণ
একদিকে শয়ে শয়ে মানুষের মৃত্যু, অন্যদিকে ঘরছাড়া লক্ষাধিক মানুষ—এই অবস্থায় সরকারের দায় এড়িয়ে মন্ত্রীর এহেন মন্তব্যে বেজায় ক্ষুব্ধ পাকিস্তানি নাগরিকরা। রাস্তায় নেমে আন্দোলন আরও জোরদার করেছেন তাঁরা।
পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এই বন্যা শুধু মানবিক বিপর্যয় নয়, বরং সরকারের অদক্ষতা, দায়িত্ব এড়ানো এবং রাজনৈতিক দোষারোপের নগ্ন চিত্রও স্পষ্ট করে তুলেছে।


