Monday, December 22, 2025
Latestআন্তর্জাতিকজীবনযাপন

Elon Musk: পৃথিবীর ইতিহাসে এই প্রথম! ইলন মাস্কের সম্পদের মূল্য ৭৪৯ বিলিয়ন ডলার

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ব্যক্তিগত সম্পদমূল্যের নিরিখে একের পর এক নজির গড়েই চলেছেন টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে তাঁর সম্পদমূল্য ৭০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। ফোর্বস ম্যাগাজিনের রিয়েল-টাইম বিলিয়নিয়ার্স তালিকা অনুযায়ী, বর্তমানে মাস্কের মোট সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৭৪৯ বিলিয়ন ডলার।

এই বাস্তবতায় অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা, খুব বেশি দেরি নেই ইতিহাসের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ইলন মাস্কই এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি ডলারের সম্পদের মালিক হতে চলেছেন।

মাত্র গত সপ্তাহেই মাস্কের সম্পদমূল্য ৬০০ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছিল। তাঁর মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের শেয়ার বাজারে আনার সম্ভাবনার খবর সামনে আসতেই টেসলা-সহ মাস্কের অন্যান্য সংস্থার শেয়ারে চাঙ্গাভাব দেখা যায়। তার সরাসরি প্রভাব পড়ে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পদমূল্যে।

এরপর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সম্পদমূল্য ৭০০ বিলিয়ন ডলার পেরোনোর পিছনে বড় ভূমিকা নেয় যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের এক গুরুত্বপূর্ণ রায়। টেসলার প্রধান নির্বাহী হিসেবে ইলন মাস্কের বিপুল অঙ্কের বেতন প্যাকেজ বহাল রাখার নির্দেশ দিয়েছে ডেলাওয়্যার অঙ্গরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট। গত শুক্রবার দেওয়া এই রায়কে মাস্কের জন্য বড় আইনি সাফল্য হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

২০১৮ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী, মাস্কের পারিশ্রমিক নির্ধারিত হয়েছিল প্রায় ৫৬ বিলিয়ন ডলার। টেসলার বর্তমান শেয়ারদর অনুযায়ী এই প্যাকেজের বাজারমূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩৯ বিলিয়ন ডলার। এই শেয়ারগুলি হাতে এলে টেসলায় মাস্কের মালিকানা ১২ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছবে।

বৈশ্বিক গবেষণা সংস্থা ইনফরমা কানেক্ট একাডেমির মতে, বর্তমান গতিধারা বজায় থাকলে ২০২৭ সালের মধ্যেই ইলন মাস্ক ট্রিলিয়নিয়ার হতে পারেন। সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, মাস্কের সম্পদমূল্য প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। এই হার অব্যাহত থাকলে বিশ্বের প্রথম লাখোকোটিপতি হওয়া কার্যত সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

যদিও এই দৌড়ে মাস্ক একা নন। ইনফরমার পূর্বাভাস বলছে, এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী জেনসেন হুয়াংও ২০২৮ সালের মধ্যে ট্রিলিয়নিয়ার হওয়ার দৌড়ে নাম লেখাতে পারেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত বিস্তারের নেপথ্যে এনভিডিয়ার উন্নত চিপের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি বাজার মূলধনের বিচারে বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানির স্থানও দখল করেছে এনভিডিয়া। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হুয়াংয়ের সম্পদমূল্য।

তবে আপাতত বিশ্বের অন্যান্য শীর্ষ ধনীরা মাস্কের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না। ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ল্যারি পেজের সঙ্গে মাস্কের সম্পদের ব্যবধান প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার। ল্যারির সম্পদমূল্য বর্তমানে ২৫২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার।

তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ওরাকলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন, তাঁর সম্পদমূল্য ২৪২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। চতুর্থ স্থানে থাকা অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের সম্পদ ২৩৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। পঞ্চম স্থানে রয়েছেন গুগলের আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিন, যার সম্পদমূল্য ২৩৩ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার।

বিশ্লেষকদের মতে, বৈদ্যুতিক গাড়ি, মহাকাশ প্রযুক্তি, রোবোটিকস এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা—এই চার ক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে পুঁজি করেই ইলন মাস্ক নিজের অবস্থানকে ক্রমশ আরও অপ্রতিদ্বন্দ্বী করে তুলছেন। সেই কারণেই বিশ্বের ধনী তালিকায় তিনি কার্যত সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, পৃথিবীর শীর্ষ ধনীদের তালিকায় ভারতীয়দের মধ্যে মুকেশ আম্বানি রয়েছেন ১৮ নম্বরে। তাঁর সম্পদের মূল্য ৯২.৫ বিলিয়ন ডলার। গৌতম আদানি রয়েছেন ২৮ নম্বরে। আদানির সম্পদের মূল্য ৫৬.৩ বিলিয়ন ডলার।

তথ্যসূত্র: ফোর্বস