‘শীঘ্রই ভারতীয় পণ্যের ওপর থেকে শাস্তিমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করবে আমেরিকা; কমবে পারস্পরিক শুল্কও’
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: ভারতীয় রফতানিকারীদের জন্য সুখবর। বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি আনন্দ নাগেশ্বরন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শীঘ্রই ভারতীয় পণ্যের ওপর আরোপিত ২৫ শতাংশ শাস্তিমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করতে পারে।
নাগেশ্বরনের কথায়, “আমার দৃঢ় বিশ্বাস ৩০ নভেম্বরের পর এই শাস্তিমূলক শুল্ক আর থাকবে না। এটি কোনও সুস্পষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে বলা নয়, সাম্প্রতিক ঘটনাবলির ধারাবাহিকতা থেকেই আমার এই আশা।” তিনি আরও জানান, আগামী ৮–১০ সপ্তাহের মধ্যেই শুল্ক জটের সমাধান হতে পারে।
পারস্পরিক শুল্ক হ্রাসের সম্ভাবনা
প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা জানান, বর্তমানে যে ২৫ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক কার্যকর রয়েছে, তা কমে ১০ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে আসতে পারে। এতে ভারতীয় রফতানিকারীরা বড়সড় স্বস্তি পেতে পারেন।
শুল্ক বিরোধের পটভূমি
গত আগস্ট মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। কারণ হিসেবে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালীন ভারত মস্কোর সঙ্গে জ্বালানি বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে। এর ফলে মার্কিন প্রশাসন দিল্লিকে “শাস্তি” দেওয়ার পথ বেছে নেয়।
কূটনৈতিক তৎপরতা
শুল্ক ইস্যুতে ইতিমধ্যেই দুই দেশের মধ্যে এক দফা কূটনৈতিক আলোচনা হয়েছে। কয়েক দিন আগেই ভারতের প্রধান বাণিজ্য আলোচক ও বাণিজ্য মন্ত্রকের বিশেষ সচিব রাজেশ আগরওয়াল নয়াদিল্লিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডান লিঞ্চের সঙ্গে বৈঠক করেন। এটিই ছিল শুল্ক আরোপের পর দুই দেশের প্রথম মুখোমুখি বৈঠক।
রফতানিকারীদের আশার আলো
শাস্তিমূলক শুল্কে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ভারতীয় রফতানিকারীরা। কৃষি থেকে শুরু করে টেক্সটাইল ও ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যের রফতানি রীতিমতো ধাক্কা খেয়েছে। তাই নাগেশ্বরনের সাম্প্রতিক মন্তব্যে তাঁদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে।
সব মিলিয়ে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জেদ এবং ধারাবাহিক আলোচনার জেরেই ওয়াশিংটন নরম হতে শুরু করেছে বলে কূটনৈতিক মহল মনে করছে। এখন দেখার বিষয়, ট্রাম্প প্রশাসন ঠিক কবে আনুষ্ঠানিকভাবে শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা করে।