Tuesday, November 11, 2025
Latestআন্তর্জাতিক

৪ বার ফোন করেছিলেন ট্রাম্প, ধরেননি মোদী

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: গত চার মাস ধরে ভারত-মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্কে চাপানউতোর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ধারাবাহিক উল্টোপাল্টা মন্তব্যে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটনের মধ্যে দূরত্ব প্রকট হচ্ছে।

সংঘর্ষবিরতি নিয়ে বিতর্ক

ভারতের সামরিক অভিযান অপারেশন সিঁদুর–এর পর পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি কার্যকর হয়। সেই সময় ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, এই সংঘর্ষবিরতিতে তাঁর ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু নয়াদিল্লি স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, পাকিস্তানের অনুরোধ ও পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমেই যুদ্ধবিরতি স্থির হয়েছে, সেখানে তৃতীয় পক্ষের কোনও ভূমিকা নেই। সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্পষ্ট করে বলেন, “ভারত নিজের সিদ্ধান্তে চলেছে, বাইরের চাপে নয়।”

মোদীর ফোন না ধরা প্রসঙ্গ

জার্মানির সংবাদমাধ্যম ফ্রাঙ্কফুর্টার অলগেমেইন সম্প্রতি দাবি করেছে, গত কয়েক সপ্তাহে অন্তত চারবার ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্প, কিন্তু মোদী সাড়া দেননি। এই দাবি যদি সত্য হয়, তবে তা প্রমাণ করে যে নয়াদিল্লি মার্কিন প্রেসিডেন্টের চাপকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। যদিও সংসদে মোদী স্বীকার করেন, সংঘর্ষবিরতির আগের দিন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তিনি ব্যস্ত থাকায় কথা হয়নি। পরে মোদী নিজেই ফোন করে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন।

শুল্ক চাপানোর হুমকি

ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ না করায় আমেরিকায় ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। কিন্তু নয়াদিল্লির অবস্থান স্পষ্ট—চাপের মুখে মাথা নত করবে না ভারত। সাম্প্রতিক ভাষণে মোদী বলেছেন, “আমাদের উপর যত চাপই প্রয়োগ করা হোক না কেন, ভারত তার শক্তি বাড়িয়ে তা মোকাবিলা করবে।”

কূটনৈতিক বার্তা

আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের মতে, এই পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ভারত এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। ট্রাম্পকে প্রকাশ্যে ‘বন্ধু’ আখ্যা দিলেও মোদী আসলে জানিয়ে দিচ্ছেন—দেশের স্বার্থই প্রথম অগ্রাধিকার। জার্মানির সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের একাধিক প্রচেষ্টা উপেক্ষা করা ভারতের একধরনের কূটনৈতিক বার্তা, যেখানে নয়াদিল্লি স্পষ্ট করছে—শুল্ক কিংবা চাপ, কোনোভাবেই ভারতীয় নীতি বদলাবে না।