Tuesday, November 11, 2025
FEATUREDLatestরাজ্য​

২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার রিভিউ পিটিশন খারিজ সুপ্রিম কোর্টে

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের বহুল আলোচিত এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট ফের কঠোর অবস্থান নিল। ২৬ হাজার (আসলে ২৫,৭৩৫) চাকরি বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য জমা পড়া সমস্ত আবেদন খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। খারিজ হয়েছে রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) এবং চাকরিহারাদের একাংশের রিভিউ পিটিশনও।

সোমবার বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চ জানায়, নিয়োগ পরীক্ষার প্রকৃত ওএমআর শিট পাওয়া যাচ্ছে না। সিবিআই তদন্ত এবং বাগ কমিটির রিপোর্টে স্পষ্টভাবে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। তাই রায় পুনর্বিবেচনার কোনও ভিত্তি নেই।

এর আগে গত ৩ এপ্রিল তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করে দেয়। আদালত জানিয়েছিল, প্রকৃত তথ্য না থাকায় যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের আলাদা করা সম্ভব নয়। সেই কারণেই সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আদালত নির্দেশ দেয়, নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে এবং দাগি বা অযোগ্য প্রার্থীদের ফেরত দিতে হবে তাঁদের পাওয়া বেতন।

রাজ্য সরকার ও এসএসসি-র যুক্তি ছিল, এত বিপুল সংখ্যক শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করলে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। বহু স্কুলে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক শূন্য হয়ে যাবে, ফলে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বেন। এই যুক্তি তুলে ধরে মধ্যশিক্ষা পর্ষদও সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল। আদালত শর্তসাপেক্ষে সেই আবেদন মেনে নিয়ে জানায়, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকরা ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত চাকরিতে বহাল থাকতে পারবেন। তবে রাজ্যকে অবশ্যই ৩১ মে-র মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। ইতিমধ্যেই সেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রাজ্য।

কিন্তু রাজ্য ও এসএসসি-র আর্জি সত্ত্বেও পুনর্বিবেচনার দরজা পুরোপুরি বন্ধ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতিদের মন্তব্য, এত গুরুতর দুর্নীতির প্রমাণ সামনে আসার পরে আদালতের পূর্ববর্তী রায়ে পরিবর্তন আনার কোনও সুযোগ নেই।

ফলত, এসএসসির ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের রায় বহাল থাকল। ডিসেম্বর পর্যন্ত অস্থায়ী ছাড় পেলেও, নতুন নিয়োগ শুরু না হওয়া পর্যন্ত রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।